রবীন্দ্র তর্পণে শ্যামাপ্রসাদের গুণগান, ভোট আসছে বোঝালেন দিলীপ ঘোষ
শোভাঞ্জন দাশগুপ্ত
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ আগেই জানিয়েছিলেন এবারের বাইশে শ্রাবণ ঘটা করে পালন করতে চলেছেন তাঁরা। জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে রবীন্দ্রমূর্তিতে সদলবলে মালা দিতে যাবার পরিকল্পনা থাকলেও দিলীপ ঘোষ এদিন সদলবলে হাজির হলেন নিমতলা মহাশ্মশানে রবীন্দ্রনাথের স্মৃতিসৌধে। কবিগুরুকে মাল্যদান করে ঘুরেও নিলেন গঙ্গাপাড়েও। গঙ্গার ফুরফুরে হাওয়ায় চাঙ্গা হয়ে চলল ফোটোসেশনও।
এদিনের রবীন্দ্র প্রয়াণ দিবসে কবিগুরু সম্বন্ধে যতটা না বললেন দিলীপ ঘোষ, তার থেকে বেশি সময় ব্যায় করলেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে নিয়েই। এদিন নিমতলা মহাশ্মশানে রবীন্দ্রনাথের স্মৃতিসৌধে মাল্যদানের পর দিলীপবাবু বললেন, “ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বিজেপি পার্টির প্রতিষ্ঠাতা। কলকাতার ছেলে। তাঁর চেয়ে বড় বাঙালি কে ছিলেন? বাঙালির জন্য কেউ কিছু করে থাকলে আশুতোষ মুখোপাধ্যায় ও শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ই করেছেন। বাঙালির জন্য তো হোমল্যান্ড শ্যামাপ্রসাদ দিয়েছেন। নাহলে আমরা আজ কোথায় থাকতাম। দণ্ডকারণ্যে বাঙালির পরিচয় দিতে হত। আধা বাংলা আধা হিন্দি ভাষা বলতাম। এখানে রামনবমী করতে পারছি না, ওখানে করতে হত। শ্যামাপ্রসাদ বাংলার জনক। তিনি বাংলা ভাষাকে স্বীকৃতি দিয়েছেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ভাষায় পরীক্ষার ব্যবস্থা ছিল না। তাঁর বাবা বাংলা চালু করলেন। তাঁর বাবা প্রথম শিক্ষার্থী হিসাবে শ্যামাপ্রসাদকে জোর করে ভর্তি করলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং শ্যামাপ্রসাদ ফার্স্টক্লাস ফার্স্ট হলেন। শ্যামাপ্রসাদ যখন ভাইস চ্যান্সেলর ছিলেন তখন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে সমাবর্তন হয়েছিল সেখানে রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে এলেন। কবিগুরু প্রথমবার বাংলাতেই ভাষণ দিলেন। যাঁদের স্মৃতিশক্তি কম বা জ্ঞানের বিস্তার কম, তারা ভুলে যান এসব বা জানতে চান না। কাকে কী বলেন বোঝা যায় না। যাঁরা বিহার থেকে বুদ্ধি ধার করেন তারা তো বাঙালির বুদ্ধির খোঁজ খবর রাখেন?”
https://www.facebook.com/dilipghoshbjp/posts/3110214115730142
২১-এ বিধানসভা নির্বাচন বাংলায়। তার আগে ভোটকে মাথায় রেখে বিজেপির রবীন্দ্র স্মরণ, এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিকমহল। তৃণমূলের মুখপাত্র তাপস রায়ের কটাক্ষ, ‘রবীন্দ্রনাথ আঁকড়ে ভুল বোঝানোর চেষ্টা। বাঙালির কৃষ্টি-সংস্কৃতির সঙ্গে বিজেপির কোনও যোগসূত্র নেই। নিছকই রাজনীতি এটা।’ সিপিএম নেতা শমীক লাহিড়ীর কথায়, ‘চিরকালই সম্প্রীতির কথা বলেছেন রবীন্দ্রনাথ। সেই সম্প্রীতিতে বিষ ঢালতে চাইছে যাঁরা, তাঁদের রবীন্দ্রনাথ নিয়ে কথা বলার অধিকার নেই।’
Comments are closed.