এভাবেই বিকশিত হোক দিকে দিকে ‘ছত্রাক’
অস্মিতা দে
করোনা, মহামারী, লকডাউন, মাস্ক, স্যানিটাইজার– গত কয়েক মাস এসবের মধ্যেই কাটছে নাগরিক জীবন। তার উপর আবার আমফানের দানবীয় তাণ্ডব নাজেহাল করে তুলেছে আমাদের। কেউ হারিয়েছে প্রিয়জনকে। কেউ আবার মাথার উপর ছাদ। সব মিলিয়ে ২০২০ হারানোর তালিকায় দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হতে চলেছে। এসবের মাঝে ভালোও হয়েছে কারও কারও। প্রতিটি মানুষের ভিতরে একটি সুপ্ত সত্তা থাকে। কেউ পারে তার বিকাশ ঘটাতে, কারও আবার অন্তর্নিহিত থেকে যায়। দীর্ঘ সময়ের লকডাউনে এমন বেশ কিছু সৃষ্টিই তার প্রকৃত উদাহরণ।
যে সময়ে দাঁড়িয়ে মানুষের মনে নানা দোলাচল-অনিশ্চয়তা, ঠিক সেই সময় সাঁতরাগাছির ‘ছত্রাক’ টেনে বের করল ভালোবাসার এক সুপ্ত ‘কঙ্কাল’। বিয়ের মাস দুয়েকের মধ্যেই স্বামীহারা হয়েছিল মেয়েটি। বহু পুরুষের মাঝে দাদার বন্ধু ডাক্তারবাবুকেই মনে ধরেছিল তাঁর। চেয়েছিল নিজের করে পেতে। কিন্তু সময়ের ফের। কথা রাখেনি ডাক্তারবাবু। ভালোবাসার বাঁধন ছিঁড়ে জুড়তে গিয়েছিল নতুন সম্পর্ক। তার আগেই সব শেষ। একই টোটকায়, একই নিয়মে শেষ করল নিজেকে ও ভালোবাসার ডাক্তারবাবুকে। তবু ২৬ বছরের যৌবন আবদ্ধ থাকল তাঁর কঙ্কালজুড়ে। কবিগুরুর সৃষ্টিকে সম্মান জানিয়ে পরিচালক অলোক কুমার উপাধ্যায় স্বল্পপরিসরে মেলে ধরেছেন এক অনবদ্য কাহিনি।
একইভাবে এমন দুর্যোগের দিনে বিশেষ করে শিশুরা যে সময়ে একেবারে ঘরবন্দি, তখন এমন স্মার্ট, মডার্ন স্বপরিবার দুগ্গা দর্শন সত্যিই প্রশংসনীয়। ‘দুর্গে দুর্গতিনাশিনী’ ফেলে আসা একটুকরো ছেলেবেলার মহালয়ার দিনগুলোকে খানিক মনে করিয়ে দেয়।
বলাবাহুল্য, মহাদেব যেভাবে এমন করোনাকালেও ছেলেমেয়েদের জন্য বাজারে যাচ্ছেন এবং স্ত্রী-সন্তানদের মর্ত্যে আসা নিয়ে তাঁর চিন্তাও যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। বাবা হিসেবে যথার্থ দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
প্রতিটা চরিত্র নিজ নিজ গুণে ফুটিয়ে তুলতে সক্ষম সকলেই। দুটো ভিন্নধারার এমন কঠিন বাস্তব পর্দায় ফুটিয়ে তুলে মুন্সিয়ানার পরিচয় দিয়েছেন পরিচালক অলোক কুমার উপাধ্যায়। সবশেষে বলাই যায় ভবিষ্যতে আরও নতুন সৃষ্টির খানিক প্রতীক্ষা বাড়িয়ে দিল ছত্রাক।
Comments are closed.