১ অক্টোবর থেকে চালু হচ্ছে আনলক ৫.০

বীরেন ভট্টাচার্য, নয়াদিল্লি

বুধবার সন্ধ্যায় পঞ্চম আনলক পর্বের নির্দেশিকা ঘোষণা করল কেন্দ্রীয় সরকার। সমস্ত রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে চিঠি লিখে নির্দেশিকা মেনে চলতে বললেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব অজয় ভাল্লা।এবারের আনলক পর্বে আরও বেশ কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়ার ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। কন্টেনমেন্ট জোনের বাইরের এলাকাগুলিতে আরও বেশ কিছু ক্ষেত্রে ছাড়ের ঘোষণা করা হয়েছে কেন্দ্রের তরফে। সেখানে বলা হয়েছে,

১. সিনেমা হল, থিয়েটার, মাল্টিপ্লেক্স খোলা যাবে ৫০ শতাংশ টিকিট বিক্রির শর্তে, তার নিয়মাবলী তৈরি করবে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক।

২. ব্যবসায়িক এক্সিবিশন করা যাবে, যার গাইডলাইন প্রকাশ করবে বাণিজ্য মন্ত্রক।

৩. খেলোয়াড়দের প্রশিক্ষণের জন্য সুইমিং পুল খোলা যাবে, তার গাইড লাইন প্রকাশ করবে ক্রীড়া ও যুব কল্যাণ মন্ত্রক।

৪. বিনোদন পার্ক বা এই ধরণের জায়গা খোলা যাবে, তবে তার গাইড লাইন প্রকাশ করবে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক।

এবারের আনলক পর্বে স্কুল কলেজ এবং অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং কোচিং সেন্টার গুলিও খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে বলা হয়েছে, এই বিষয়ে ১৫ অক্টোবরের পর ধাপে ধাপে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলি। কেন্দ্রের তরফে নির্দেশিকায় বলা হয়েছে যে, এই বিষয়ে রাজ্য সরকার বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলি সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা স্কুল ও কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করে নিম্নলিখিত শর্তে কাজ শুরু করতে পারবে,

১. অনলাইন এবং দূরশিক্ষা ব্যবস্থার ওপর জোর দিতে হবে এবং সেগুলি চালিয়ে যেতে হবে।

২. স্কুলগুলি অনলাইন ক্লাস চালিয়ে যাওয়ার সময় যদি পড়ুয়ারা সশরীরে উপস্থিত থাকার পরিবর্তে অনলাইন ক্লাস করতে চায়, তাতেই গুরুত্ব দিতে হবে।

৩. শুধুমাত্র অভিভাবকের লিখিত অনুমতি নিয়ে স্কুল বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে আসতে পারবে পড়ুয়ারা‌।

৪. হাজিরা বাধ্যতামূলক করা যাবে না, এটা অভিভাবকদের ওপর ছাড়তে হবে।

৫. স্কুল এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে নির্দিষ্ট নিয়মাবলী তৈরি করতে হবে পরিস্থিতি বিবেচনা করে এবং কেন্দ্রীয় সরকারের গাইডলাইন মেনে

৬. যে সমস্ত স্কুল বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা হবে, তাদের আবশ্যিকভাবে রাজ্য বা সেই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে জারি করা গাইডলাইন মেনে চলতে হবে।

৭. উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা কলেজ খোলার ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে পারে উচ্চশিক্ষা মন্ত্রক। অনলাইন এবং দূরশিক্ষা ব্যবস্থা চলবে।

৮. শুধুমাত্র রিসার্চ স্কলার বা স্নাতকোত্তর পড়ুয়াদের জন্য বিশেষ করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে যাঁদের ল্যাবরেটরি প্রয়োজন, তাঁদের ১৫ অক্টোবর থেকে কাজের অনুমতি দেওয়া হয়েছে এবারের আনলক পর্বে। যদিও সেক্ষেত্রে একাধিক শর্ত দেওয়া হয়েছে।

আনলক ৪.০ পর্বেই ১০০ জনের মধ্যে জমায়েতের অনুমতি দেওয়া হয়েছে, সেই নিয়মাবলী জারি থাকছে কন্টেমেন্ট জোনের বাইরে। বেশ কিছু শর্ত সাপেক্ষে জমায়েতের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

১. কোনও হলে অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে সেই হলের আসন সংখ্যার ৫০ শতাংশ এবং সর্বোচ্চ ২০০ জন যোগ দিতে পারবেন।

২. সামাজিক দূরত্ববিধি, ফেস মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার বাধ্যতামূলক এবং থাকতে হবে থার্মাল স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা।

খোলা জায়গার ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে চলতে হবে এবং ফেস মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। সেক্ষেত্রে জায়গার পরিধি মাথায় রাখতে হবে এবং সেখানে থার্মাল স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা রাখতে হবে।

জমায়েতের কারণে যাতে করোনা ভাইরাস না ছড়াতে পারে তার জন্য রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে গাইড লাইন প্রকাশ করতে হবে।

তবে এবারের আনলক পর্বেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অনুমতি ছাড়া আন্তর্জাতিক বিমান সফর স্থগিত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, কন্টেনমেন্ট জোনে জরুরি পরিষেবা ছাড়া কঠোর ভাবে লকডাউন থাকবে এবং সেই সম্পর্কিত সমস্ত তথ্য জেলাশাসকের ওয়েবসাইটে রাখতে হবে ও তা কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকে জানতে হবে। কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আলোচনা না করে রাজ্য বা কোনও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল স্থানীয় স্তরে কন্টেনমেন্ট জোনের বাইরে কোনও লকডাউন জারি করতে পারবে না। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক তাদের গাইড লাইনে জানিয়েছে, আন্তঃ এবং অন্তঃ রাজ্য পণ্য বা চলাচলে কোনও বিধিনিষেধ জারি থাকছে না এবং সেক্ষেত্রে কোনও অনুমতিও লাগবে না। অন্তঃসত্ত্বা, ৬৫ বছর বয়সি বা কো-মর্বিডিটি থাকলে তাঁকে খুব জরুরি দরকার ছাড়া বাইরে বের হতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। একই সঙ্গে আরোগ্য সেতু মোবাইল অ্যাপ ব্যবহারের আবেদন জানানো হয়েছে কেন্দ্রের তরফে।