হাওড়ার ডুমুরজলার সভা থেকে দলত্যাগীদের আক্রমণ তৃণমূলের
নিজস্ব সংবাদদাতা: হাওড়ার ডুমুরজলায় বিজেপির পাল্টা সভা করল তৃণমূল কংগ্রেস। সভামঞ্চে উপস্থিত ছিলেন হাওড়া সদর তৃণমূলের চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায়, হাওড়ার সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, ভাস্কর ভট্টাচার্য-সহ দলের বিধায়করা। রবিবার দুপুরে ডুমুরজলার বিশাল জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধান বক্তা অরূপ রায় বলেন, “নেতারা পাল্টি খায়। কর্মীরা পাল্টায় না। ওইজন্য নিজেকে দলের একজন কর্মী মনে করি। তাই পাল্টি খাওয়ার সম্ভাবনা নেই।”
সভা মঞ্চ থেকে অরূপ রায় আরও বলেন, “আমাদের সিবিআই, ইডির ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। মমতার সঙ্গে ছিলাম, আছি এবং শেষদিন পর্যন্ত থাকব।” পাশাপাশি বিজেপি ও দলত্যাগীদের আক্রমণ করে তিনি আরও বলেন, “যারা বাংলার সংস্কৃতি কিছুই জানে না, যারা কবিগুরু, নজরুল, বিদ্যাসাগরকে চেনে না, তারা বাংলা দখলের স্বপ্ন দেখছে। প্রলোভন দেখিয়ে কিছু লোককে নিয়ে গেছে। আমি বলি, রাবণ খলনায়ক হলেও তাকে মানুষ পুজো করে। কিন্তু ঘরশত্রু বিভীষণকে কেউ পুজো করেনা। সুতরাং যারা বিশ্বাসঘাতকতা করেছে নেত্রীর সঙ্গে, দলের সঙ্গে, তারা শিক্ষা পাবে আগামী নির্বাচনে।”
ডুমুরজলার সভা থেকে শুভেন্দু অধিকারী ও রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “খেলা হবে। লড়াইয়ের মাঠে খেলা হবে। যাদের তুমি বাঘ ভেবেছ তারা কিন্তু বেড়াল। আর যখন ২০২১-এ রেজাল্ট বেরবে তারা ইঁদুর হয়ে যাবে। বিজেপিকে বলুন, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড দিদি দিচ্ছে, নিয়ে নে৷ স্বাস্থ্যটা আগে ঠিক কর। নাহলে খেলব কার সঙ্গে। আমি চ্যালেঞ্জ করছি, রাজীব তুমি ডোমজুড়ে প্রার্থী হও। পালিয়ে যেও না। ও বিজেপির প্রার্থী হলে এমন হারান হারাব, ২০০২১-এর পর থেকে যেন দু’বছর ধরে যেন ঘুমোতে না পারে। কাঁথির মেজোবাবু, হাইব্রিড বিজেপি সরদার ছয় কোটি টাকা নিলে, সেটা কোথায়? হলদিয়া ডক লুটে নিলে। দল এককাট্টা হয়ে গেছে শুভেন্দু, রাজীব দল ছেড়ে যাওয়ার জন্য। দলের ছেলেরা দেখতে চাইছিল, আর ক’টা মিরজাফর আছে। এখন একেবারে পরিষ্কার। ২০২১-এ যদি সম্ভব হয়, কাউন্টিংয়ের দিন মোদিজি, অমিতজিরা বাংলায় থাকুন।”
হাওড়ার সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “হাওড়ায় ১৬টি আসনেই জিতব। খেলা হবে। একশ গোলে জিতব।” পাশাপাশি, শিবপুরের বর্ষীয়ান বিধায়ক জটু লাহিড়ী বলেন, “রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বেইমান ও মিরজাফর। হাওড়া পুরসভাকে সমস্যায় ফেলে চলে গিয়েছে রথীন চক্রবর্তী। আজকে কন্ট্রাক্টরদের বিক্ষোভের জন্য দায়ী রথীন চক্রবর্তী।”
এদিনের সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তৃণমূলের তরুণ নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য বলেন, “গদ্দার বেইমানদের পায়ে কাঁপন ধরিয়ে দিয়েছে আপনাদের আজকের ভিড়। ওরা সবাই জোট বেঁধেছে এক মহিলাকে সরাতে হবে বলে। কিন্তু একটা কথা জানি, সবাইকে দাঁড়িপাল্লার একদিকে রেখে ওই হাওয়াই চটি রাখলে সেটার ওজন বেশি হবে। আর কিছু লাগবে না। এটা বিধির বিধান, নবান্নের ১৪ তলায় দিদিই আবার আসবে।”
Comments are closed.