আলিপুরদুয়ারে মধ্যযুগীয় বর্বরতা! নগ্ন অবস্থায় গ্রামে ঘোরানো হল আদিবাসী মহিলাকে
নিজস্ব সংবাদদাতা : আলিপুরদুয়ারের কুমারগ্রাম সাক্ষী থাকল এক পৈশাচিক ঘটনার।পরকীয়ার অপরাধে গ্রামের সালিসি সভার মোড়লদের নির্দেশে ঝড়-বৃষ্টির রাতে আদিবাসী মহিলাকে নগ্ন করে গ্রামে ঘোরানোর অভিযোগ উঠল গ্রামের মাতব্বরদের বিরুদ্ধে। নির্যাতিতা মহিলাকে নগ্ন অবস্থায় গ্রামে ঘোরানোর করুণ ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করা হয়েছে। রবিবার সেই ভিডিও ভাইরাল হতেই চমকে উঠেছেন শিক্ষিতসমাজ। নারকীয় ঘটনাটি বৃহস্পতিবার রাতে ঘটলেও রবিবার সন্ধ্যায় তা প্রকাশ্যে আসে। মধ্যযুগীয় বর্বরতার ঘটনাটি ঘটেছে আলিপুরদুয়ার জেলার কুমারগ্রাম ব্লকের আদিবাসী মহল্লার একটি প্রত্যন্ত গ্রামে। ঘটনার খবর পেয়ে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত ওই নির্যাতিতা মহিলাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছে কুমারগ্রাম থানার পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, ছয়মাস আগে পরকীয়ার জেরে পরপুরুষের সঙ্গে চলে গিয়েছিলেন আদিবাসী গৃহবধূটি। তবে সেই ব্যক্তির সাথে মহিলার সম্পর্ক খারাপ হওয়ার আবারও সে ফিরে আসে নিজের স্বামীর কাছে। মানবিকতার খাতিরে তার স্বামীও তাঁকে গ্রহণ করে। কিন্তু ঘটনায় বেঁকে বসেন গ্রামের মাতব্বরা। গ্রামের মোড়লদের নির্দেশে ওই মহিলা ও তাঁর স্বামীর উপর শুরু হয় মানসিক-শারীরিক নির্যাতন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে আদিবাসী ওই দম্পতিকে সালিসি সভায় হাজির থাকার নির্দেশ দেন মোড়লরা। সালিসি সভার মাতব্বররা নিদান দেয় পরকীয়ায় লিপ্ত ওই আদিবাসী মহিলাকে গ্রামে উলঙ্গ করে ঘোরাতে হবে। পাশাপাশি মহিলার স্বামীকে সমাজচ্যুত থাকার নির্দেশও দেয় তারা। অভিযোগ, সালিসি সভার নিদানে বৃষ্টির রাতে প্রথমে ওই মহিলাকে মারধর করা হয়। এরপর একে একে নির্যাতিতা দেহ থেকে সমস্ত জামাকাপড় ছিঁড়ে ফেলে সালিসি সভায় উপস্থিত গ্রামের যুবক ও মাতব্বররা। এরপর অন্ধকার রাতেই শুরু হয় আদিবাসী সমাজের কিছু মাতব্বরদের পৈশাচিক অত্যাচার। সেই অত্যাচারের ভিডিও মুহূর্তে তুলে রাখেন স্থানীয়রা। কিন্তু রবিবার সন্ধ্যা নাগাদ সেই নারকীয় ঘটনার ছবি ভাইরাল করে দেওয়া হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। ছবি ভাইরাল হতেই স্তম্ভিত জেলার মানুষ। এই পাশবিক ঘটনায় ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়ে তিন জন। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি জারি পুলিশের।
Comments are closed.