Bengal Fast
বিশ্ব মাঝে বাংলা খবর

বাবরি মামলার রায় বিচার ব্যবস্থার প্রহসন : সিপিআইএম, প্রশংসায় আদবানি-যোশী

বীরেন ভট্টাচার্য, নয়াদিল্লি

বাবরি মসজিদ ধ্বংসকাণ্ডে সমস্ত অভিযুক্তদের বুধবার মুক্তি দিয়েছে বিশেষ সিবিআই আদালত। এদিন আদালতের রায়ের পরেই অভিযুক্ত সাক্ষী মহারাজের আইনজীবী প্রশান্ত সিং অটল বলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও প্রামাণ্য তথ্য বা নথি না পাওয়ার কারণে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তাঁর ভাষায়, “আজ সিবিআই বিশেষ আদালত ৩২ জন অভিযুক্তকেই মুক্তি দিয়েছে। জানানো হয়েছে, সিবিআইয়ের অভিযোগ ভুল ছিল। পাশাপাশি তাঁদের বিরুদ্ধে যে তথ্য প্রমাণ দাখিল করা হয়েছে, তাও যথেষ্ট নয় বলে জানিয়েছে আদালত। সিবিআই আদালত জানিয়েছে, মসজিদ ধ্বংস করা হয়েছে অসামাজিক লোকজনের দ্বারা, তাতে সংঘ পরিবার বা বিশ্ব হিন্দু পরিষদের হাত ছিল না। মসজিদ ধ্বংস করতে বাধা দিয়েছিলেন ভিএইচপি এবং সংঘ নেতারা। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অভিযুক্তদের জড়িত থাকার প্রমাণ নেই।”

এদিকে আদালতের রায়ের প্রশংসা করে স্বাগত জানান লালকৃষ্ণ আদবানি এবং মুরলী মনোহর যোশী। বর্ষীয়ান নেতা আদবানি বলেন, “বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ঘটনায় আমি সর্বান্তকরণে বিশেষ আদালতের রায়কে স্বাগত জানাচ্ছি। আদালতের এই রায় রামজন্মভূমি আন্দোলনের প্রতি আমার ব্যক্তিগত এবং বিজেপির দায়বদ্ধতার প্রমাণ।” এদিকে আদালতের রায়ে উচ্ছ্বসিত মুরলী মনোহর যোশী বলেন, “এটি আদালতের একটি ঐতিহাসিক রায়। এর দ্বারা প্রমাণ হয়, ৬ ডিসেম্বর অযোধ্যার ঘটনায় কোনও ষড়যন্ত্র ছিল না। আমাদের সভা এবং মিছিল কোনও ষড়যন্ত্রের অংশ ছিল না।”

- Sponsored -

আদালতের রায়ে যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন মামলার অন্যতম ব্যক্তি ইকবাল আনসারি। নতুন করে যেন আবার কোনও সমস্যা তৈরি না করা হয়, তার আবেদন জানিয়েছেন মামলকারীদের মধ্যে অন্যতম ইকবাল আনসারি। তিনি বলেন, “এর সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন ব্যক্তি মামলা করেছেন। আমরা চাই, মামলাটি আগে না বেড়ে এর শেষ হোক। আমরা আদালতের রায় এবং সংবিধানকে সম্মান করি।”

এদিকে বাবরি মসজিদ ধ্বংস মামলায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের তরফে নানান প্রতিক্রিয়া পাওয়া গিয়েছে। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেন, “এই রায়ে প্রমাণ হয়, সেই সময় সন্ন্যাসী, ভিএইপি কর্মকর্তা ও বিজেপি নেতাদের অসম্মান করতে মিথ্যা মামলা দিয়েছে কংগ্রেস এবং সবটাই ভোট ব্যাঙ্ক রাজনীতির জন্য।”

বাবরি মসজিদ ধ্বংস মামলায় অভিযুক্তদের ছেড়ে দেওয়ার রায় সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধ বলে মত প্রকাশ করেছে কংগ্রেস। তাদের যুক্তি, “সুপ্রিম কোর্ট যেখানে বলেছে, বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ঘটনা বেআইনি এবং ভীষণভাবে আইনের শাসনের অবমাননা, সেখানে বিশেষ সিবিআই আদালতের, অভিযুক্তদের ছেড়ে দেওয়ার রায়, সংবিধান এবং সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরিপন্থী।”

সিপিআইএমের তরফে বলা হয়েছে, “বিশেষ সিবিআই আদালতের রায় বিচার ব্যবস্থার প্রহসন। দীর্ঘ ২৮ বছর সময় লাগলেও ন্যায় পাওয়া গেল না। সেদিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত সব ভিএইচপি এবং আরএসএস নেতারা এই অপরাধ মূলক কাজের প্ররোচনা দিয়েছেন। যদিও, বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ঘটনায় তাদের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ থেকে মুক্ত করা হয়েছে।” মিম নেতা আসাদউদ্দিন ওয়াইসি বলেন, “এটা ন্যায় বিচারের ব্যাপার। বাবরি মসজিদ ধ্বংসের জন্য যারা দায়ী তাদের শাস্তি দেওয়ার বিষয়। যদিও অভিযুক্তদের কেন্দ্রে স্বরাষ্ট্র এবং মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী করে তাঁদের পুরস্কৃত করা হয়েছে অতীতে।” শিব সেনা মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত বলেন, “রায়ে বলা হয়েছে বাবরি মসজিদ ধ্বংস কোনও চক্রান্ত ছিল না, ঘটনাচক্রে আচমকাই হয়েছে। এটা প্রত্যাশিত রায়, এই দিকটা আমাদের ভুলে যেতে হবে। যদি বাবরি মসজিদ ধ্বংস না হত, তাহলে আমরা রাম মন্দিরের ভূমি পূজন দেখতে পেতাম না।”

Subscribe to our Whatsapp Group for daily news alerts.


You might also like

- sponsored -

Comments are closed.