‘সেনার পাশে থাকার বার্তা দেবে সংসদ’ : নরেন্দ্র মোদি, ‘আমরা সেনার পক্ষে’ : থারুর
বীরেন ভট্টাচার্য, নয়াদিল্লি
করোনা ৬ মাস বন্ধ থাকার পর সোমবার বসল সংসদের বাদল অধিবেশন। প্রয়াত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়কে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লা, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি-সহ উপস্থিত সব সাংসদরা। পাশাপাশি শিল্পী পণ্ডিত যশরাজ, ছত্তিশগড়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অজিত যোগী, মধ্যপ্রদেশের রাজ্যপাল লালজি ট্যান্ডন, উত্তরপ্রদেশের মন্ত্রী কমলা রানি, চেতন চৌহান, রঘুবংশ প্রসাদ সিং-সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিদের প্রয়াণে শ্রদ্ধা জানালেন অধ্যক্ষ, প্রধানমন্ত্রী-সহ সাংসদরা। এরপর প্রয়াত বিশিষ্ট ব্যক্তিদের শ্রদ্ধা জানিয়ে এক ঘণ্টার জন্য মুলতুবি হয়ে যায় লোকসভা।
सभा ने देश की एकता-अखंडता की रक्षा में वीरगति को प्राप्त सशस्त्र सेना, अर्धसैनिक बलों के वीर सैनिकों व पुलिस बल के बहादुर जवानों को भी नमन किया। कर्तव्य पथ पर बलिदान देने वाले कोरोना योद्धा, डॉक्टर्स, चिकित्साकर्मियों, सफाइकर्मियों, पुलिसकर्मियों व स्वयंसेवकों का भी स्मरण किया। pic.twitter.com/Xh03ysIUiQ
— Lok Sabha Speaker (@loksabhaspeaker) September 14, 2020
এদিন সংসদ শুরুর আগে চিনকে কড়া বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের সেনাবাহিনী অসীম সাহস, নিষ্ঠা ও দেশের প্রতি আত্মত্যাগের ভাবনা থেকে সীমান্তে মজবুত দেওয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। তাঁরা কঠিন উচ্চতায় রয়েছেন। কিছুদিন পরেই বরফ পড়া শুরু হবে। তাই আমি আত্মবিশ্বাসী যে এই অবস্থায় সংসদ ও সাংসদরা এক হয়ে একটা বার্তা দেবেন, যে সেনার পাশে শক্তভাবে দাঁড়িয়ে রয়েছে গোটা দেশ।”
May the upcoming Parliament Session be a productive one. https://t.co/OKM4uTVnUG
— Narendra Modi (@narendramodi) September 14, 2020
এ দিকে বাদল অধিবেশনের শুরুতেই লাদাখে চিনা সেনার আগ্রাসন নিয়ে লোকসভায় মুলতুবি প্রস্তাব এনেছেন কংগ্রেসের লোকসভার নেতা অধীর চৌধুরী এবং কে সুরেশ। কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর বলেন, ‘সংসদের প্রতি দায়বদ্ধ সরকার, চিনের বিদেশ ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের কথা তারা কখন জানিয়েছে? দেশের মানুষকেও জানানো উচিত সরকারের। আমরা সব সমালোচনার ঊর্ধ্বে, দেশের সেনার পক্ষে।’ কংগ্রেস নেতা কপিল সিবাল বলেন, ‘দেশের প্রতিটি নাগরিক আমাদের জওয়ানদের পেছনে রয়েছে। আমরা তাঁদের কুর্নিশ করি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর নীতি ও কাজের পেছনে ক’জন আছেন? সন্দেহ রয়েছে।’
নিট পরীক্ষার জন্য ১২ জন পড়ুয়ার আত্মহত্যা করার ঘটনা নিয়ে মুলতুবি প্রস্তাব আনেন সিপিআইএম এবং ডিএমকে-র সাংসদরা। বেকারত্ব, অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার দাবি জানালেন এনসিপি-র সুপ্রিয়া সুলে।
প্রধানমন্ত্রী এদিন সংসদে বলেন, ‘একটা কঠিন সময়ে সংসদ খুলেছে। করোনা যেমন রয়েছে, তার মধ্যেই কাজ করে যেতে হবে। সাংসদরা কাজকেই বেছে নিয়েছেন। আমি তার জন্য সব সাংসদকে অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানাই। আবার লোকসভা ও রাজ্যসভা আলাদা সময়ে হবে, এবং শনি ও রবিবার সংসদের কাজ হবে, তাও মেনে নিয়েছেন সাংসদরা।’ প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘যতক্ষণ না ওষুধ আসছে, কোনও আলগা দেওয়া যাবে না। আমরা চাই পৃথিবীর যে কোনও জায়গা থেকে ওষুধ তৈরি হোক, আমাদের বিজ্ঞানীরা সফল হবেন এবং আমরা খুব দ্রুত সবাইকে এই করোনা সমস্যার বাইরে নিয়ে আসব।’
তবে বাদল অধিবেশনের প্রধম দিনে ৩০ মিনিটের জিরো আওয়ার এবং প্রশ্নোত্তর পর্ব না থাকা নিয়ে তুমুল হইহট্টগোল করেন বিরোধী দলের সাংসদরা। সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী সাংসদদের আশ্বস্ত করে বলেন, ‘এখন অন্যরকম পরিস্থিতি। যেখানে একদিনের জন্যও বিধানসভা বসছে না, সেখানে আমরা এখানে এতজন সাংসদ রয়েছি। সরকারকে প্রশ্ন করার অনেক পদ্ধতি রয়েছে। আমরা আলোচনা থেকে পালিয়ে যাচ্ছি না।’ কেন্দ্রের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সংসদের ভিতরে-বাইরে সরব হন বিরোধীরা। একটি ভিডিয়ো বার্তায় তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, প্রশ্নোত্তর পর্ব না রাখার অর্থ বিরোধীদের কথা বলতে সুযোগ না দেওয়া, এবং জিরো আওয়ারের সময়সীমা কমিয়ে আধঘণ্টা করা হয়েছে। অর্থাৎ বিরোধীদের প্রত্যেকটি সময়ই নিয়ে নেওয়া হয়েছে। তাঁর কথায়, “সংসদের প্রতিটি দিনই একদিন করে গণতন্ত্রের হত্যা।” গণতন্ত্রকে হত্যা করতেই এই পদক্ষেপ করেছে সরকার, এমনই অভিযোগ তোলে কংগ্রেসও। পরে হইহট্টগোলের আবহে আগামীকাল বিকেল ৩টে পর্যন্ত মুলতুবি হয়ে যায় লোকসভা।
প্রথমদিনের বাদল অধিবেশনে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে তাঁর করা মন্তব্য নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী। অবিলম্বে তৃণমূল সাংসদকে নিঃশর্তে ক্ষমা চাইতে বলেন তিনি, পরে ক্ষমা চেয়ে নেন সৌগত রায়।
লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লা জানান, এদিনের অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন ৪০০ জন সাংসদ। আটটি বিল পেশ করা হয়েছে এবং দুটি বিল পাস হয়েছে বলে জানান লোকসভার অধ্যক্ষ।
Comments are closed.