Bengal Fast
বিশ্ব মাঝে বাংলা খবর

কৃষিকে ভিত্তি করেই ২১-এর রণকৌশল নীতীশ কুমারের বঙ্গ ব্রিগেডের

একান্ত ফোনালাপে পশ্চিবঙ্গের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি পর্ব সম্পর্কে জানালেন জেডিইউ-এর রাজ্য সভাপতি অশোক দাস। বাংলায় কৃষিকেই ভিত্তি করে এগোতে চায় নীতীশ কুমারের দল।

বীরেন ভট্টাচার্য, নয়াদিল্লি

‘কৃষি আমাদের ভিত্তি’, বামফ্রন্ট সরকারের এই স্লোগানের কিছুটা সুর শোনা গেল জেডিইউ-এর রাজ্য সভাপতি অশোক দাসের গলায়। একান্ত ফোনালাপে এ রাজ্যে তাঁদের বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি পর্ব সম্পর্কে কিছু কথা জানা গেল। কৃষি পশ্চিমবাংলার অন্যতম ভিত্তি, গ্রাম-বাংলার বেশিরভাগ মানুষ এখনও কৃষির ওপরেই নির্ভরশীল। কৃষিকাজ এবং দিনমজুরের কাজ করেই বাংলার গ্রামীণ এলাকায় তাঁদের জীবিকা নির্বাহ করেন। সেই জায়গাটিতেই জোর দিয়ে নিজেদের প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছে নীতীশ কুমারের দল।

জেডিইউ সুপ্রিমো নীতীশ কুমারের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সভাপতি অশোক দাস

ইউপিএ-২ সরকারের আমলে গ্রামীণ অর্থনীতিকে মজুবত এবং সমাজের নানা কাজে অগ্রগতি আনতে একশো দিনের কাজের সূচনা করা হয়। ধীরে ধীরে তা একটি দুর্নীতির আঁতুড়ঘরে পরিণত হয়েছে বলে মনে করেন জেডিইউ রাজ্য সভাপতি অশোক দাস। তাঁর কথায়, “রাস্তা বা মাঠের ঘাস পরিষ্কার করা হচ্ছে, তবে এই শ্রম কৃষিকাজে লাগালে কৃষিতে উৎপাদন ব্যয় অনেক কমে যেত, ফলে দামও অনেক কম হত।”একশো দিনের কাজে যে শ্রমদিবস লাগানো হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ জলে যাচ্ছে বলেও মনে করেন তিনি।

 

তবে শুধুমাত্র কৃষি বা একশো দিনের কাজই নয়, জেডিইউ-এর রাজ্য সভাপতির গলায় উঠে এসেছে করোনা ভাইরাসের মোকাবিলা প্রসঙ্গও। অশোক দাসের কথায়, “করোনা নিয়ে সামনের সারি থেকে লড়াই করছেন আশাকর্মী এবং অক্সিলিয়ারি মিডওয়েফারি নার্সিং কর্মীরা। অথচ একজন আশাকর্মীর বেতন মাত্র সাড়ে তিন হাজার টাকা। শুধুমাত্র জলের বোতল নিয়ে মাত্র তিন ঘণ্টা বসে থেকে একশো দিনের কাজে ১৯০ টাকা পাওয়া যায়, অথচ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে একজন আশাকর্মী এত কম টাকা পান কী করে?”এর জন্য রাজ্য ও কেন্দ্র, উভয় সরকারকেই দায়ী করেন জেডিইউ-এর রাজ্য সভাপতি। এই বেতন বৈষম্যের বিরুদ্ধেই তাঁদের আন্দোলন চালিয়ে যাবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন অশোক দাস।

- Sponsored -

বিশ্বভারতীর ঘটনা নিয়েও তোপ দাগেন তিনি। একটি জাতীয় স্তরের বিশ্ববিদ্যালয় বুলডোজার নিয়ে ভেঙে দেওয়া হল, অথচ ১০০ মিটারের মধ্যে থানা! এরপরেও জেলাশাসক এবং প্রশাসনের লজ্জা হওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।

বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে এই বিষয়গুলি যে তাঁদের বক্তব্যে উঠে আসবে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। জেডিইউ তবে কীভাবে বা কতগুলি আসনে লড়াই করবে, তার উত্তরও দেন রাজ্য সভাপতি।

ইতিমধ্যে রাজ্যের বেশ কিছু জায়গায় তাঁদের সংগঠন তৈরি হয়েছে। সেগুলিকে ধরেই এগিয়ে যেতে চায় নীতীশ কুমারের দল। উত্তরবঙ্গের মধ্যে বালুরঘাট, কুশমণ্ডি, গোয়ালপোখর, রায়গঞ্জ, গঙ্গারামপুর, তপন, ইটাহার, হেমতাবাদ, করণদিঘি। দার্জিলিং-এর শিলিগুড়ি, মাটিগারা-নকশালবাড়ি, ফাঁসিদেওয়া, ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি। জলপাইগুড়ির মালাজার, ধূপগুড়ি, ময়নাগুড়ি, কোচবিহারের দিনহাটা। এছাড়াও মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর, মালদা টাউনের মতো বিধানসভা কেন্দ্রগুলি রয়েছে। বর্ধমান পশ্চিমের আসানসোল, কুলটি, বরাকর, উত্তর ও দক্ষিণ আসানসোল, রানিগঞ্জেও তাঁদের ভাল সংগঠন রয়েছে বলে দাবি করেছেন অশোক দাস। বর্ধমান পূর্বে গলসি, জামালপুর, কাটোয়া, পুরুলিয়ার পারা, জয়পুর, ঝালদা। হুগলির আরামবাগ, খানাকুল। বিশেষ করে গঙ্গা ও দামোদর অববাহিকা এবং সীমানা লাগোয়া জেলাগুলিতে বেশি টার্গেট রয়েছে নীতীশ কুমারের দলের।

কৌশল প্রস্তুত দলের, এখন নির্বাচনে দামামা বাজার অপেক্ষায় রয়েছে নীতীশ কুমারের বঙ্গ ব্রিগেড।

Subscribe to our Whatsapp Group for daily news alerts.


You might also like

- sponsored -

Comments are closed.