সঙ্গীত থেমে যাবে তালিবান যুগে? ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত তরুণ শিল্পীদের
নিজস্ব সংবাদদাতা: তালিবান শাসনে সঙ্গীত শিক্ষার ভবিষ্যৎ কী হবে তা নিয়ে আফগানিস্তানের সঙ্গীতজগৎ গভীর চিন্তায়। এর আগের তালিবান যুগে সঙ্গীতজগৎ কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তালিবান শাসনে সঙ্গীত ও সুর শিক্ষা নিষিদ্ধ। কিন্তু এবার সেই তালিবান অনেক নমনীয় মনোভাব দেখানোর চেষ্টা করলেও সঙ্গীতজগৎ আদতে সিঁদুরে মেঘ দেখছে।
দেশে তালিবানি শাসন শুরু হতেই শিল্পীদের আশঙ্কা, প্রতিষ্ঠানের দরজায় তালা ঝোলানো শুধু সময়ের অপেক্ষা। গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে দেশ-জাতির পরিচিতি বদলের চেষ্টায় অক্লান্ত প্রচেষ্টা চালিয়ে গিয়েছে আফগানিস্তানের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মিউজিক। শৈশবের তালিবানি মারণ-হুমকির অন্ধকার মুছে ফেলে সাম্প্রতিককালে বিশ্বমঞ্চে রবাব-সেতার-ক্ল্যারিনেটে সুর তুলেছেন এই প্রতিষ্ঠানেরই একঝাঁক কন্যা। এবার যেন এক লহমায় অনিশ্চিত হয়ে পড়ল ওই তরুণ শিল্পীদের ভবিষ্যৎ, বিশেষত মহিলাদের।
কিছু দিন আগেই নিউইয়র্কের বিখ্যাত কার্নেগি হলে ধ্রুপদী সঙ্গীতে ঝড় তুলেছিলেন এই স্কুলেরই একদল মেয়ে। এই স্কুল থেকেই তৈরি হয়েছে আফগানিস্তানের প্রথম এবং একমাত্র মহিলা ব্যান্ড, যার নাম ‘জোহরা’ ব্যান্ড। সুইৎজারল্যান্ডে ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরাম-এর মঞ্চেও সঙ্গীত পরিবেশন করেছে ‘জোহরা’। কিন্তু এই সঙ্গীতচর্চার জন্য বহুবার আক্রমণের শিকার হতে হয়েছে দলের সঙ্গীত শিল্পীদের ।
সঙ্গীতচর্চার জন্য ছোট থেকে বেতের আঘাত খেয়ে বড় হয়েছেন আফগানিস্তানের প্রথম মহিলা RAP শিল্পী সোরৌরি। যাঁর গান ‘আমি ভাবতে চেয়েছিলাম, ওরা আমায় মেরেছে’— আজও সেই ইতিহাসের সাক্ষ্যই বহন করে। আফগানিস্তানের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মিউজিকের প্রধান সারমাস্ত বলছেন, তাঁদের ইচ্ছে ছিল বিশ্বের সামনে দেশের অন্য ছবি তুলে ধরা। যা অধরাই থেকে যাবে মনে হচ্ছে…। তালিবানি শাসনে সঙ্গীতের সুরধারা থেমে যাবে ধরে নিয়েই দিন গুনছে সঙ্গীতশিল্পীরা।
Comments are closed.