করোনা আবহে ৩০% কমল সাংসদ বেতন, দু’বছরের জন্য বরাদ্দ বন্ধ সাংসদ উন্নয়ন তহবিলে

বীরেন ভট্টাচার্য, নয়াদিল্লি
এক বছরের জন্য সাংসদদের বেতন ৩০% কমিয়ে দেওয়ার বিল পাস করল লোকসভা। বিল কার্যকর হবে ১ এপ্রিল ২০২০ থেকে। করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে রসদ জোগাড়ের জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আগেই অর্ডিন্যান্স এনেছিল কেন্দ্রীয় সরকার, রাজ্যসভায় পাস হলেই রাষ্ট্রপতি স্বাক্ষরের মাধ্যমে আইনে পরিণত হবে বিলটি। সোমবার বিলটি পেশ করা হয়। এর পাশাপাশি ২০২০-২১ এবং ২০২১-২২ অর্থবর্ষের জন্য সাংসদ উন্নয়ন তহবিলের টাকা দেওয়া সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়েছে।
এদিন লোকসভায় বিতর্কে যোগ দিয়ে কংগ্রেসের লোকসভার নেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী দাবি করেন, যত দ্রুত সম্ভব সাংসদ উন্নয়ন তহবিলের টাকা দেওয়া চালু করতে হবে। তিনি বলেন, “আমরা যাতে সাংসদ উন্নয়ন তহবিলের টাকা পাই তার জন্য আমাদের একটি প্রস্তাব পাস করতে হবে। সাংসদ উন্নয়ন তহবিলের টাকা দেওয়া বন্ধ করার পিছনে কী কারণ রয়েছে তা বুঝতে পারছি না। এই টাকার ৮৩% খরচ হয় গ্রামাঞ্চলে। বেতনের ৩০ শতাংশ কমিয়ে দেওয়ায় রাজি হয়েছেন সাংসদরা। আমি অনুরোধ করছি যত দ্রুত সম্ভব সাংসদ উন্নয়ন তহবিলের টাকা চালু করা হোক।” সংসদ উন্নয়ন তহবিলের টাকা দেওয়া বন্ধ করার বিরোধিতা করেছেন অমরাবতীর নির্দল সংসদ নবনীত রবি রানা। তিনি বলেন, “দয়া করে আমাদের বেতন নিয়ে নিন, তবে উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ করা সাংসদ উন্নয়ন তহবিলের টাকা বন্ধ করবেন না।”
বিতর্কের জবাবে সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী বলেন, অপ্রত্যাশিতভাবে আসা করোনা ভাইরাসের জন্য কিছু পদক্ষেপ করতেই হবে সরকারকে। তার কথায়, “এই অর্ডিন্যান্স এবং বিল সাংসদদের বেতন ৩০ শতাংশ কমিয়ে দেওয়ার জন্য যারা সমর্থন করেছেন সেই সমস্ত সাংসদদের ধন্যবাদ জানাই। এটা কোনও বড় বা ছোট অঙ্কের টাকার বিষয় নয়। প্রশ্নটা হল নিজের থেকেই প্রথমে ত্যাগের অভ্যাস করা উচিত। আমি খুশি যে, এই কাজটি প্রথম শুরু হয়েছে লোকসভা এবং রাজ্যসভার থেকে।”
সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আরও বলেন, “যখন অপ্রত্যাশিত কিছু ঘটে, আমাদের কিছু অন্য রকম সিদ্ধান্ত নিতে হয়। আমাদের উচিত অন্যের কাছে রোল মডেল হওয়া। আপনারা সাংসদ উন্নয়ন তহবিলের বিষয়টি উল্লেখ করেছেন। আমরা করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে অনেক সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থা।” প্রহ্লাদ যোশী আরও বলেন, “করোনা ভাইরাসের জন্য তৈরি হওয়া পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে ২০ লক্ষ কোটি টাকার বিশেষ প্যাকেজ এবং ১.৭ কোটি টাকা গরিব কল্যাণ যোজনা চালু করা হয়েছে।” এদিন লোকসভায় সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী জানান, “মহাত্মা গান্ধি জাতীয় কর্মসংস্থান নিশ্চিতকরণ আইন বা ১০০ দিনের কাজে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। সাংসদ উন্নয়ন তহবিলের টাকা নিয়ে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা দু’বছরের জন্য।”
Comments are closed.