পুরুলিয়া সুচকাণ্ডে ফাঁসির সাজা মা ও প্রেমিককে, ঘোষণা অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারকের
নিজস্ব সংবাদদাতা : প্রেমিকের সঙ্গে হাত মিলিয়ে নিজের সন্তানের দেহে সুচ ফুটিয়ে হত্যা করেছিল মা। পুরুলিয়া সুচকাণ্ডের সেই ঘটনায় ফাঁসির সাজা ঘোষণা করলেন জেলা আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক রমেশ কুমার প্রধান। ২০১৭ সালের ১১ জুলাই সাড়ে তিন বছরের শিশুকে সূচ ফুটিয়ে হত্যা করে মা ও তার প্রেমিক। সেই ঘটনার ৪ বছর পর ফাঁসি হল দুই অভিযুক্ত মঙ্গলা গোস্বামী এবং তাঁর প্রেমিক সনাতন ঠাকুরের।
পুরুলিয়ার মফসসল থানার নদিয়াড়া গ্রামের বাসিন্দা মঙ্গলা গোস্বামী কাজ করতেন সনাতন ঠাকুরের বাড়ি। সেখানেই প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে দুজনের মধ্যে। নিজেদের প্রেমের মাঝে বাধা হয়ে দাঁড়ায় সাড়ে সাড়ে তিন বছরের শিশুকন্যা। প্রেমিক সনাতন ঠাকুরের সঙ্গে হাত মিলিয়ে নিজের সন্তানের দেহে সুচ ফুটিয়ে হত্যা করেছিল মা মঙ্গলা গোস্বামী। ওই শিশুকে পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে সেখান থেকে প্রথমে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ এবং কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে আনা হয়। চিকিৎসা চলাকালীন সেই শিশুর এক্স-রে রিপোর্ট দেখে চোখ কপালে ওঠে পুলিশ-সহ চিকিৎসকদের। দেখা যায় খুদের নিম্নাঙ্গ-সহ শরীরের একাধিক জায়গায় সুচ ফুটে রয়েছে।
কীভাবে সেই সুচ শিশুকন্যার শরীরে ঢুকল তদন্ত শুরু করে পুলিশ। জেরা করা হয় মঙ্গলাকে। পেশায় কীর্তনশিল্পী তথা ওঝা সনাতনের বিরুদ্ধেই শিশুটির শরীরে সাতটি সুচ ফুটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এরপর সনাতনকে গ্রেফতার করে জেরা করতেই রহস্য ফাঁস হয়। তদন্তে উঠে আসে মা ও প্রেমিক মিলেই সুচ ফুঁটিয়ে সন্তানকে হত্যা করেছে। সরকারি আইনজীবী আনোয়ার আলি আনসারি বিচারকের সামনে ঘটনাটি বিরলের মধ্যে বিরলতম আখ্যা দিয়ে অভিযুক্তদের চরম শাস্তি দাবি করেন। এরপরই সোমবার একদিনের জন্য রায় স্থগিত করে দেন বিচারক। আজ মঙ্গলবার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করলেন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক।
Comments are closed.