‘একটা দৈত্য, আরেকটা দানব’! হুগলির সাহাগঞ্জে মোদি-শাহকে তোপ মমতার
নিজস্ব সংবাদদাতা : ৪৮ ঘণ্টা আগে হুগলির সাহাগঞ্জের সভা থেকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে একাধিক ইস্যুতে আক্রমণ শানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। নির্বাচনী আবহে তার পাল্টা জবাব দিতে বুধবার সাহাগঞ্জেই সভা করলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলীয় কর্মীদের বার্তা দিতে একযোগে নিশানা করলেন প্রধানমন্ত্রী-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জুটিকে। বিধানসভা নির্বাচনের মুখে সাহাগঞ্জ থেকে তৃণমূলনেত্রীর বেনজির আক্রমণে সরগরম হয়ে উঠল বঙ্গ রাজনীতি। মোদি-শাহের জুটিকে রীতিমতো চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, ‘একটা দৈত্য, আরেকটা দানব সরকার চালাচ্ছে। একটা হোঁদল কুতকুত, আরেকটা কিম্ভূত কিমাকার।’
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রীকে সিবিআইয়ের জেরা-সহ তৃণমূল সাংসদ, মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সংস্থার একাধিক পদক্ষেপ নিয়ে দলনেত্রীর হুঁশিয়ারি, ‘সুস্থ বাঘের থেকে আহত বাঘ আরও বেশি ভয়ঙ্কর। কতজনকে গ্রেফতার করে দেখব। দু’মাস পরে দেখব, কার কত জোর।’ রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম না করে এদিন তৃণমূল সুপ্রিমোর অভিযোগ করেন, ‘বাচ্চা মেয়েকে কয়লা চোর বলছে, এদিকে কয়লা চোরদের নিয়ে কোলে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।’ তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, দুর্গাপুরে বুকিং করা হোটেল কোন কোল মাফিয়ার? নোটবন্দির টাকা গেল? কোথায় কোল ইন্ডিয়া বিক্রি হচ্ছে কেন? রেল-সেল বিক্রি হচ্ছে কেন? নরেন্দ্র মোদি জবাব দাও।’
বিজেপির সঙ্গে যুক্ত মহিলাদের সুরক্ষা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাহাগঞ্জের মঞ্চে মনোজ তিওয়ারি-সহ তৃণমূলে একঝাঁক তারকা যোগদান প্রসঙ্গে নেত্রীর স্লোগান, খেলা হবে। বাংলায় পদ্মশিবির সম্পর্কে তাঁর দাবি, ‘ভয়ে কেউ কথা বলতে পারে না, শুধু আমাকে ওরা ভয় পায়।’
এদিন পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, কৃষক আন্দোলন, শিল্প, উন্নয়ন। একের পর এক ইস্যুতে কেন্দ্র সরকারকে পাল্টা নিশানা করেছেন তৃণমূল নেত্রী। তাঁর অভিযোগ, ‘চিঠি দেওয়া সত্ত্বেও রাজ্যকে ডানলপ-জেশপ অধিগ্রহণের অনুমতি দেয়নি কেন্দ্র। তাসত্ত্বেও শ্রমিকদের পাশে দাঁড়িয়েছে তৃণমূল সরকার। তাঁদের ১০ হাজার টাকা করে এক্সগ্রাসিয়া দেওয়া হয়।’ নেত্রীর দাবি, ‘গ্লোবাল বিজনেস সামিট থেকে বিপুল বিনিয়োগের প্রস্তাব পেয়েছে রাজ্য। সিঙ্গুরে আমরা ১১ একর জমির উপর অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রি তৈরি করছি। ডানকুনি থেকে শুরু করে রেললাইন ধরে শিল্প হতে হতে যাবে।’
প্রধানমন্ত্রীর দক্ষিণেশ্বর মেট্রোর উদ্বোধন নিয়েও তোপ দাগেন মমতা। তাঁর দাবি, ‘মেট্রো আমি করে দিয়ে গিয়েছি। তুমি ফিতে কেটেছো। লজ্জা করে না? কে দিল? কে করল? আর কে দালালি করল?’ সাহাগঞ্জ থেকেও ফের বহিরাগত তত্ত্বে শাণ দিলেন মমতা। তাঁর চ্যালেঞ্জ, ‘বাংলাই বাংলা শাসন করবে।’ ট্রাম্পের থেকে খারাপ হাল হবে বলে প্রধানমন্ত্রীর নাম না করে কটাক্ষ তৃণমূল সুপ্রিমোর।
Comments are closed.