শরীরে আটকে যাচ্ছে লোহার জিনিস! ‘ম্যাগনেট ম্যান’ গুজব বাংলায়
নিজস্ব সংবাদদাতা : হাতা, পেরেক, কাঁচি, খুন্তি থেকে লোহার ঢাকনা সবই নাকি আটকে যাচ্ছে মানবদেহে। রাজ্যের উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম– স্যোশাল মিডিয়ায় এখন খালি গায়ের ছবিটা নজর কেড়েছে সকলের। আর এ অভিযোগ উঠেছে কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন নেওয়ার পরেই। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার তথ্য আসছে রাজ্যের কোচবিহার, তেহট্ট, কোন্নগর, দুর্গাপুর বা বসিরহাট থেকে। করোনা ভ্যাকসিন কোভিশিল্ড নেওয়ার পর নাকি চুম্বকের মতো শরীরে আটকে যাচ্ছে যে কোনও লোহার জিনিস। কারোর পিঠে, বাহুমূলে বা কানের লতিতে আটকে যাচ্ছে লৌহ পদার্থ। আর অত্যাশ্চর্য ঘটনায় নিজেদের ‘ম্যাগনেট ম্যান’ বলতেও কসুর করছেন না অনেকেই। এমনই একজন হুগলির কোন্নগরের এমএন বোস এলাকার ব্যাবসায়ী গৌতম কুমার দে। কয়েকদিন আগেই করোনা ভ্যাকসিন নিয়েছিলেন তিনি। সোমবার আচমকাই তিনি লক্ষ্য করেন বুকে ১০ টাকার কয়েন আটকে থাকছে তাঁর। এমনকী লোহার যে কোনও জিনিসও নাকি চুম্বকের মতো আটকে থাকছে গৌতমবাবুর শরীরে। এই নিয়ে পারিবারিক চিকিৎসকের পরামর্শও নাকি নিয়েছেন তিনি।
নদিয়াতেও খোঁজ মিলল দু’জন ‘ম্যাগনেট ম্যান’-এর। কৃষ্ণনগর কোতায়ালি থানার ঘূর্ণি এলাকার বাসিন্দা সুবীর কুণ্ডু ও সুভদ্রা কুণ্ডুকে দেখার জন্য বাড়ির সামনে ভিড় জমিয়েছেন পাড়াপ্রতিবেশীরা। তাঁদের দুজনেরই দাবি, ভ্যাকসিন নেওয়ার পর থেকেই শরীরে আটকে যাচ্ছে লৌহ পদার্থ!
জল্পনার খবর এসেছে দুর্গাপুর থেকেও। পানাগড় বাজারের নতুন পাড়ার বাসিন্দা অজিত দাস ‘ম্যাগনেট ম্যান’-এর ছবি স্যোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করে ভাইরাল হয়েছেন। অজিত দাস একটি ভিডিও ফুটেজে দাবি করেছেন করোনার দ্বিতীয় ভ্যাকসিন নেওয়ার পরই নাকি তাঁর শরীর চুম্বক হয়ে গেছে। অনায়াসে নাকি চামচ, মোবাইল, তালা ইত্যাদি লোহার জিনিস আটকে যাচ্ছে দেহে। খবর পেয়ে পানাগড় প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে একটি মেডিক্যাল টিম পৌঁছায় অজিত দাসের বাড়ি। স্বাস্থ্যকর্মীরা তাঁর শারীরিক পরীক্ষা করে কোনও অস্বাভাবিকতা খুঁজে পাননি। অজিতবাবুও জানান যে তাঁর শরীরে কোনওরকম অস্বস্তি নেই। স্বাস্থ্যকর্মীদের তিনি জানান নিছকই মজার ছলে এই ভিডিও করেছিলেন তিনি। এই ঘটনা সম্পূর্ণ গুজব বলে জানিয়েছেন ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক চিকিসক বিপ্লব মণ্ডল। তিনি জানান, ‘চিকিৎসা বিজ্ঞানের সাথে এর কোনও যোগ নেই। কোন ভ্যাকসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় এই ধরনের ঘটনার খবর নেই। সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন গুজব খবর এটা।’
Comments are closed.