Bengal Fast
বিশ্ব মাঝে বাংলা খবর

বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে রাজ্যজুড়ে পালিত ‘হুল দিবস’

নিজস্ব সংবাদদাতা : বুধবার রাজ্যজুড়ে পালিত হল ‘হুল দিবস’। প্রতিবছর ৩০শে জুন পালিত হয় হুল দিবস বা সাঁওতাল বিদ্রোহ দিবস। ১৮৬৫ সালে ইংরেজদের দেশথেকে বহিষ্কার করার প্রথম সঙ্ঘবদ্ধ বিদ্রোহ আন্দোলন আদিবাসীদের। কানুকে ফাঁসি দেওয়া হয় আর সিধুকে গুলি করে মেরে ফেলে ইংরেজরা। প্রতিবছর আজকের দিনেই সিধু-কানুর স্মরণে পালিত হয় ‘হুল দিবস’। পুরুলিয়া, আসানসোল, আলিপুরদুয়ার-সহ জঙ্গলমহলের বিস্তীর্ণ এলাকায় সিধু-কানুর শহিদ বেদীতে শ্রদ্ধা নিবেদন করে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পালিত হল এই দিনটি।

আসানসোল বাংলাপাড়া কালীপাহাড়ি এলাকায় পশ্চিমবঙ্গ সরকার আয়োজিত ‘হুল দিবস’ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের আইন ও শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক, জেলাশাসক বিভু গোয়েল, আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের পুলিশ কমিশনার অজয় ঠাকুর, আসানসোল পৌর নিগমের পুর প্রশাসক অমরনাথ চ্যাটার্জি, পুর সদস্য অভিজিৎ ঘটক, পূর্ণশশী রায়, জামুরিয়া বিধানসভার বিধায়ক হরেরাম সিংহ প্রমুখ ব্যক্তিবর্গ। এই অনুষ্ঠানে মন্ত্রী মলয় ঘটক সিধু-কানুর প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করেন এবং প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন। এরপরে নানান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

রাজ্যের অন্যান্য জেলার সাথে পুরুলিয়া জেলাতেও সাড়ম্বরে পালিত হল ‘হুল দিবস’। পুরুলিয়া জেলার মানবাজার ২নং ব্লকের বুরুডি মোড়ে কোভিড বিধি মেনে আদিবাসী উন্নয়ন বিভাগের উদ্যোগে এবং পুরুলিয়া জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পালিত হল হুল দিবস। এদিন অনুষ্ঠানে করোনা পরীক্ষা ও করোনার ভ্যাকসিনও দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বান্দোয়ান বিধানসভার বিধায়ক রাজীব লোচন সরেন, জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় ব্যানার্জি, জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ গুরুপদ টুডু, মানবাজারের মহকুমা শাসক শুভজিৎ বসু, মানবাজার ২নং ব্লকের বিডিও গোলাম গৌসল আলম, জেলা পরিষদের কো-মেন্টর জয় ব্যানার্জি-সহ অন্যান্যরা।

- Sponsored -

আলিপুরদুয়ারে কালচিনিতেও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আয়োজনে পালিত হল ‘হুল দিবস’। তবে এখানকার অনুষ্ঠান ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতর। আলিপুরদুয়ার জেলার পাঁচজন বিজেপি বিধায়ক ও আলিপুরদুয়ার সাংসদকে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলে অভিযোগ। জেলা প্রশাসনের থেকে আয়োজিত হুল দিবস অনুষ্ঠান কার্যত দলীয় অনুষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। এমনই অভিযোগ করেছেন কুমারগ্ৰামের বিজেপি বিধায়ক মনোজ কুমার ওরাঁও। তিনি জানিয়েছেন, ‘সরকারি নিমন্ত্রণপত্র জুড়ে শুধু তৃণমূল নেতাদের নাম’।

অন্যদিকে বিধায়ক মনোজ টিগ্গা অভিযোগ করেন,  ‘সরকারি অনুষ্ঠান হুল দিবসে আমাদের আমন্ত্রণ না করে শুধু আমাদের অপমান করা হয়নি, এখানে পুরো আলিপুরদুয়ার জেলার জনগণকে অপমান করা হয়েছে। আদিবাসীদের অপমান করা হয়েছে। কেননা আলিপুরদুয়ার জেলার জনগণ আমাদের নির্বাচিত করেছে। আমরা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি।’ এই বিষয়ে প্রশাসনের তরফ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। এই নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন প্রশাসনের আধিকারিকরাও।

এদিন ‘হুল দিবস’ উপলক্ষে করণদিঘি ব্লকের অন্তর্গত আলতাপুর হাইস্কুল প্রাঙ্গণে দু’দিনব্যাপী এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয় বুধবার। প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সংখ্যালঘু বিষয়ক ও মাদ্রাসা শিক্ষা দফতরের মন্ত্রী মহম্মদ গোলাম রব্বানি। এরপর সিধু-কানুর শহিদ বেদীতে মাল্যদান করেন মন্ত্রীমশাই। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি কবিতা বর্মন, জেলাশাসক অরবিন্দ কুমার মিনা, করণদিঘির বিধায়ক গৌতম পাল, বিডিও নীতিশ তামাং, পুলিশ সুপার সুমিত কুমার-সহ অন্যান্য আধিকারিকগণ। এছাড়াও স্বনির্ভর দলের বিভিন্ন রকমের ৮টি স্টল তৈরি করা হয়। অনুষ্ঠানের পাশাপাশি করোনা ভ্যাকসিন প্রদান ও ব্লাড ডোনেশন ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়। আয়োজন করা হয় তিরন্দাজ প্রতিযোগিতার। অনুষ্ঠানের শেষে সাঁওতাল সম্প্রদায়ের মাঞ্জিবাবাদের বস্ত্র দিয়ে সংবর্ধনা জানানো হয়।

Subscribe to our Whatsapp Group for daily news alerts.


You might also like

- sponsored -

Comments are closed.