মন্দা ‘অবশ্যম্ভাবী’, অর্থনীতিতে গতি আনতে মনমোহনী দাওয়াই
বীরেন ভট্টাচার্য, নয়াদিল্লি
বিরোধী দল থেকে শুরু করে সমালোচকরা বারবারই তাঁকে ‘মৌনমোহন’ বলে বহুবার কটাক্ষ করেছেন, এমনকী প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন ইউপিএ-২ জমানায় একের পর এক দুর্নীতি ধেয়ে এলেও তাঁর বিরুদ্ধে নীরব থাকারই অভিযোগ উঠেছে বারবার। তাঁকে মিছরির ছুরিতে একাধিক আঘাত করেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও। তবে মোদি-জামানায় দেশের অর্থনীতি নিয়ে বারবার মুখ খুলতে দেখা গিয়েছে সেই মনমোহন সিংকেই। এবার বিবিসি-কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে দেশের অর্থনীতির হাল বাতলে দিয়ে দাওয়াই দিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং।
এই ব্রিটিশ সংবাদসংস্থার সঙ্গে ইমেলে কথোপকথন হয় মনমোহন সিংয়ের। সেখানেই তিনি বলেন, ”অর্থনীতিতে তৈরি হওয়া এই পরিস্থিতি ‘মানবতার সংকট’ এবং ‘সরকারের ধাক্কা ও আতঙ্কের পরিস্থিতি সাধারণ মানুষকে দারুণ কষ্টের মধ্যে ফেলে দিয়েছে’।” তিনি আরও বলেন, ‘সম্ভবত এই সময়ে লকডাউন অবশ্যম্ভাবী ছিল। তবে হঠাৎ করে ঘোষণা করা এবং তার কঠোরতা চিন্তাহীন এবং সংবেদনহীন।’
তবে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি ও অর্থনীতিকে শুধুমাত্র তোপ দেগেই সীমাবদ্ধ থাকেননি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। তারজন্য তিনরকম দাওয়াইও দিয়েছেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ মনমোহন সিং। তাঁর মতে, সরকারের উচিত, ‘মানুষের দৈনন্দিন জীবন সুরক্ষিত করা এবং প্রত্যক্ষভাবে নগদের মাধ্যমে ক্ষমতার বণ্টন করা।’ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর মতে, কেন্দ্রের উচিত ব্যবসার জন্য কেন্দ্রকে ‘সরকারের সাহায্যে ঋণ-গ্যারান্টি কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে।’ এছাড়াও, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রগুলিকে ঠিক করতে ‘প্রাতিষ্ঠানিক স্বায়ত্ত্বশাসন করতে হবে।’
নগদ দেওয়া সম্পর্কে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর মত, প্রচুর ঋণ অবশ্যম্ভাবী, তবে ‘ঋণ যদি প্রাণ, সীমান্ত, জীবনযাত্রা স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরানো এবং অর্থনীতির গতিকে ত্বরাণ্বিত করে, তাহলে এর মূল্য আছে।’ তবে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর সতর্কবার্তা, ‘ঋণ গ্রহণে আমাদের লজ্জিত হলে চলবে না, তবে তা কীভাবে ব্যবহার হচ্ছে, সে বিষয়ে আমাদের দূরদর্শী হতে হবে।’
ছবি ঋণ : ইন্টারনেট
Comments are closed.