নাড্ডার সফরে নিরাপত্তায় গাফিলতির অভিযোগ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে চিঠি দিলীপ ঘোষের
বীরেন ভট্টাচার্য, নয়াদিল্লি
বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডার কলকাতা সফরে রাজ্য প্রশাসনের তরফে যথাযথ নিরাপত্তা ও পুলিশি ব্যবস্থা মোতায়েন করা হয়নি, এই অভিযোগ তুলে গতকালই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে চিঠি লিখলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, “জেপি নাড্ডার রাজ্য সফরকালে রাজ্য প্রশাসনের তরফে নিরাপত্তায় গাফিলতি ছিল। গতকাল তাঁর কর্মসূচিতে পুলিশের কোনও উপস্থিতি ছিল না। আমি এখানকার প্রশাসন ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি লিখে সেকথা জানিয়েছি। ”
গতকাল কলকাতা পৌঁছেই প্রথমে হেস্টিংসে চলে যান বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। সেখানে দলের নির্বাচনী কার্যালয়ের উদ্বোধন করেন তিনি। সেখানেই বিজেপি সভাপতিকে কালো পতাকা দেখানো হয়। সেই ঘটনায় যথেষ্ট ক্ষুব্ধ রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। এছাড়াও গাড়ি পার্ক করা নিয়েও কয়েকটি জায়গায় সমস্যা তৈরি হয় বলে বিজেপির তরফে জানানো হয়েছে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ উল্লেখ করেন, “হেস্টিংসে আমাদের দলীয় কার্যালয়ে হাতে লাঠি, বাঁশ নিয়ে প্রায় ২০০ জনের জমায়েত হয়ে কালো পতাকা দেখানো হয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকজন গাড়িতে উঠে পড়ে স্লোগান দিতে থাকে। পুলিশ তাদের থামানোর জন্য কোনও পদক্ষেপ করেনি এবং তাদের নাড্ডাজির গাড়ির খুব কাছাকাছি আসতে দেওযা হয়।”
আজ ডায়মন্ড হারবারে দিনভর নানান কর্মসূচি রয়েছে জেপি নাড্ডার। সেখানেও তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে স্লোগান দেওয়া ও বিক্ষোভ দেখানো হতে পারে বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে লেখা চিঠিতে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। বুধবার চিঠিতে দিলীপ ঘোষ উল্লেখ করেন, “আগামিকাল ১০ ডিসেম্বর ২০২০-তে নাড্ডাজির দিনভর কর্মসূচি রয়েছে ডায়মন্ড হারবারে। আমাদের কার্যকর্তারা আমাদের জানিয়েছেন, নিউটাউন থেকে ডায়মন্ড হারবার যাওয়ার পথে বিভিন্ন জায়গায় বড় ধরনের প্রতিবাদ, বিক্ষোভ করার পরিকল্পনা করছে তৃণমূলের গুন্ডারা।”
গতকাল সকালে কলকাতা পৌঁছান বিজেপি সভাপতি। হেস্টিংসে দলের নির্বাচনী কার্যলয়ের উদ্বোধন করেন তিনি। সেখানেই বিজেপি সভাপতি বলেন, “আমাদের বাংলার সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। এ রাজ্যের সঙ্গে বিজেপির বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে।” আর সেই প্রসঙ্গ ব্যাখা করতে গিয়ে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গ টেনে আনেন জেপি নাড্ডা। বাংলার অগ্রগতিতে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের অনেক ভূমিকা রয়েছে বলে দাবি করে তিনি। বিকেলে কালীঘাট মন্দিরে পুজোও দিতে যান বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা।
বিহারের বিধানসভা নির্বাচনে টানটান উত্তেজনা ও গণনার পর শেষ হাসি হেসেছে বিজেপিই। বাংলার বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির কাছে বড় পরীক্ষা ছিল বিহারের নির্বাচন। সেখানে হাসিমুখে পাস করে যাওয়ার প্রসঙ্গ তুলে ধরে এদিন জেপি নাড্ডা বলেন, “বিহারের ভোট দেখিয়ে দিয়েছে।… মোদিজিতেই আস্থা রেখেছে সাধারণ মানুষ।”
রাজ্যে তৃণমূল সরকার তোষণের রাজত্ব চালাচ্ছে বলেও এদিন অভিযোগ করেন বিজেপি সভাপতি। রাজ্যে বিজেপির ভোটের হার বাড়ানোর প্রসঙ্গ তুলে ধরে দলীয় কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করার চেষ্টা করেন তিনি। নাড্ডা বলেন, “২০০৯ লোকসভা নির্বাচনে এ রাজ্যে বিজেপি ৪ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। ২০১৯ সালে সেই হার হয়েছে ৪০ শতাংশ।” এবারের বিধানসভা নির্বাচনে এ রাজ্যে বিজেপি ২০০-র বেশি আসন পেয়েছে ক্ষমতা দখল করবে বলে এদিন দাবি করেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি।
Comments are closed.