Bengal Fast
বিশ্ব মাঝে বাংলা খবর

ঢ্যাঁড়শ বেচে সংসার চালান রসায়নের ছাত্র

দামিনী দাশ

আগে সকাল হলে বই নিয়ে বসে যেত সে। এখন সকাল হলেই বাগানের দিকে দৌড়ায়। না হলে যে, পেট চলবে না। লকডাউন পরিস্থিতি এভাবেই বদলে দিয়েছে বহু মানুষের স্বাভাবিক জীবন। আর সেই ছন্দপতনের তালিকায় রয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের রসায়ন বিভাগের স্নাতকে পাঠরত সায়ন মাইতি।

লকডাউনের জ্বালা আর অসুস্থ বাবা। এই দুইয়ের জাঁতাকলে রসায়নের স্নাতক স্তরে পাঠরত ছেলে সংসার চালাতে সবজি নিয়ে হাটে বসেছেন। ভবিষ্যৎ কী হবে সে জানে না। তবে সে ভালই বোঝে নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে পেটের টান কত রূঢ় হতে পারে!

- Sponsored -

পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়গপুরের দেবলপুর গ্রাম। লকডাউনের সময় আমফান ঝড়ে বাড়ির অ্যাসবেস্টাস ভেঙে গিয়েছিল গাছ পড়ে। সেই গাছ কাটতে গিয়ে ঘটে যায় দুর্ঘটনা। বাবা উপর থেকে নীচে পড়ে গিয়েছিলেন। তারপর থেকেই অসুস্থ তিনি। আচমকা এই বিপদ ছেলের কাছে যেন ছাদ হারানোর পরিস্থিতি। শুরু হল বাস্তবের সঙ্গে লড়াই।

রোজ সকালে উঠে বাগানের দিকে দৌড় দেয় সে। যে ঢ্যাঁড়শগুলো বিক্রি করার উপযুক্ত তা নিয়ে স্থানীয় বাজারের দিকে রওনা দেয় সায়ন মাইতি। তাঁর মতে, ‘কোনও কাজই ছোট নয়। আপাতত লকডাউন। রেজাল্টের অপেক্ষায় রয়েছি। কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে জানি না। তাই সংসার চালাতে এটা করতেই হবে।’ নিজেদের যেটুকু জমিতে ঢ্যাঁড়শ চাষ হয়েছে সেগুলো স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে সংসার চলছে।  আপাতত এভাবেই কোনওক্রমে সংসার চলছে নলিন মাইতির পরিবারে। ছেলে সায়নের আগে কখনও এই ধরনের কাজের অভিজ্ঞতা ছিল না। চলতি পরিস্থিতিতে বাস্তবের সম্মুখীন হয়ে সংসারের হাল ধরেছে বাড়ির একমাত্র সন্তান।

ছেলেকে এই পরিস্থিতিতে দেখে বাবার বক্তব্য পরিবারের হাল ধরতে তাঁর ছেলের মতোই অন্য সন্তানেরাও যেন পরিবারের পাশে দাঁড়ায়। অন্যদিকে, লকডাউন পড়াশোনার ভবিষ্যৎ প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। রেজাল্ট কবে বেরবে? তা সিদ্ধান্ত নেবে ভবিষ্যত পরিস্থিতি। আপাতত ঢ্যাঁড়শ বেচে অসুস্থ বাবাকে নিয়ে দিন গুজরান করছেন স্নাতকের পড়ুয়া।

Subscribe to our Whatsapp Group for daily news alerts.


You might also like

- sponsored -

Comments are closed.