রাসায়নিকযুক্ত জলকামান! রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে তোপ বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের
বীরেন ভট্টাচার্য, নয়াদিল্লি
যুব মোর্চার নেতাকর্মীদের ওপর রাসায়নিকযুক্ত জলকামান দাগা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসনের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানালো কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এর বিরুদ্ধে বিজেপিকর্মীরা গণতান্ত্রিকভাবে লড়াই করবেন বলে জানিয়ে দিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা।
BJP’s struggle to save the rich glory of Bengal will continue. We stand with the people of Bengal despite the brazen misuse of state power by Mamata didi. Our brave @BJYM karyakartas compelled her to close the Secretariat. This is an admission that she has lost public confidence. pic.twitter.com/oFQ1fEXNVZ
— Jagat Prakash Nadda (@JPNadda) October 8, 2020
বিজেপির যুব মোর্চার নবান্ন ঘেরাও কর্মসূচিকে কেন্দ্রীয় করে বৃহস্পতিবার দিনভর উত্তাল ছিল রাজ্য। বুধবারই রাজ্যের তরফে জানানো হয় বৃহস্পতিবার “জীবাণুমুক্ত করতে” বন্ধ রাখা হবে নবান্ন। এদিন রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় ব্যারিকেড করে দেয় পুলিশ। পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে পুলিশকর্মীও মোতায়েন করা হয় কলকাতা ও হাওড়ার বিভিন্ন জায়গায়। যুব মোর্চা কর্মীরা ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করলে জলকামান দাগে পুলিশ। তাতে যুব মোর্চার নেতাকর্মীদের পোশাকে রং লেগে যায়। মাটিতে শুয়ে পড়তে দেখা যায় রাজু বন্দোপাধ্যায়কে। আর এই বিষয়টিকে হাতিয়ার করে পাল্টা আক্রমণ শুরু করে দেয় বিজেপি। তাদের অভিযোগ, রাসায়নিক মেশানো জলকামান ছুড়েছে পুলিশ।
এদিন দিল্লিতে তোপ দাগলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। ট্যুইটে তিনি লেখেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিজেপি নেতাকর্মীদের বিক্ষোভ ঠেকাতে তাঁদের ওপর বর্বরোচিত বলপ্রয়োগ করা হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলীয় কর্মী এবং প্রশাসনের মাধ্যমে। ক্ষমতার এই অপব্যবহার অপ্রত্যাশিত এবং নিন্দনীয়।” তিনি আরও বলেন, “আমি তাঁকে আবারও পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিচ্ছি যে, বাংলার হারিয়ে যাওয়া গৌরব এবং গর্ব উদ্ধার করতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুর্নীতিগ্রস্ত, হিংসাত্মক এবং একনায়কতান্ত্রিক শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করবে বিজেপি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জমানার অবসান করবে বিজেপি।” এখানেই না থেমে তিনি আরও বলেন, “শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের ওপর জলকামান, দেশি বোমা ছোড়া, তাঁদের ওপর লাঠিচার্জ করার মধ্যে দিয়ে বোঝা যাচ্ছে যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝতে পারছেন, তাঁর দিন গোনা শুরু হয়েছে। তিনি বুঝতে পারছেন, বাংলার মানুষ তাঁর স্বৈরাচারী সরকার বদলানোর মনস্থির করে ফেলেছেন।”
This hypocritical double standard of the self-appointed liberal keepers of conscience also shows that the entire saga of torture of Bengal administration and police and the brutal suppression of opposition's voice is of no importance to them. pic.twitter.com/2c9tyg0047
— Ravi Shankar Prasad (@rsprasad) October 8, 2020
তবে শুধুমাত্র জেপি নাড্ডাই নন, এদিন পুলিশের বিরুদ্ধে সরব হন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী তথা বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদ। তিনি বলেন, “দলের নেতাদের ওপর বর্বরোচিত আক্রমণের তীব্র নিন্দা করছে বিজেপি। মমতাজি এবং তৃণমূল কংগ্রেসকে আমরা রাজনৈতিক ভাবে জানাতে চাই যে পুলিশ এবং লাঠি চালিয়ে বিজেপির বৃদ্ধি আটকানো যাবে না।” তাঁদের দলের প্রায় ১ হাজার ৫০০ কর্মী আহত হয়েছেন বলে এদিন দাবি করেন রবিশঙ্কর প্রসাদ।
এদিন নবান্নের তরফে অবশ্য রাসায়নিক মেশানোর তত্ত্ব খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ”হটিয়ে দেওয়া কর্মীদের শনাক্ত করে রাখতেই রং ব্যবহার করা হয়েছে। কোনও রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়নি।”
করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির জন্য এমনিতেই রাস্তায় বেরোনোর ওপর সতর্কতা জারি করা হয়েছে। রাজনৈতিক জমায়েতের ক্ষেত্রেও সামাজিক দূরত্ববিধি এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে কর্মসূচি পালন করতে বলা হয়েছে। ফলে এই পরিস্থিতিতে নবান্ন ঘেরাওয়ের মতো কর্মসূচি নেওয়ায় সমালোচনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
Comments are closed.