খারিজ পুনর্বিবেচনার আবেদন! ভোট-পরবর্তী হিংসা মামলায় রাজ্যকে তীব্র ভর্ৎসনা হাইকোর্টের
নিজস্ব সংবাদদাতা : ভোট-পরবর্তী হিংসা মামলায় হাইকোর্টে অস্বস্তিতে রাজ্য সরকার। ঘরছাড়াদের ঘরে ফেরাতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ। সেই নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। সেই আর্জিকে খারিজ করে দিল পাঁচ সদস্যর বৃহত্তর বেঞ্চ। একইসঙ্গে আদালত রাজ্যকে সাফ জানিয়ে দিয়েছে, ১৮ তারিখের নির্দেশই বহাল থাকবে।
এদিন কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল রাজ্যকে তীব্র ভর্ৎসনা করে বলেন, ‘যেভাবে তদন্ত হয়েছে সেটা সঠিক নয়। আমরা কিচ্ছু দেখতে চাই না। পুলিশ এফআইআরই দায়ের করেনি। এত গুরুতর অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও রাজ্য সরকার স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে কোনও পদক্ষেপ করেনি। এত লুকোচুরি কেন?’ ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, ‘যে অভিযোগ জমা পড়েছে তার তদন্ত প্রক্রিয়ায় এই মুহূর্তে কোনও অগ্রগতি নেই। এতে কি রাজ্য প্রশাসনের প্রতি মানুষের আস্থা বাড়বে?’
পাশাপাশি বৃহত্তর বেঞ্চের বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন বলেন, ‘জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কাছে ৫৪১টি অভিযোগ জমা পড়েছে। রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের কাছে একটিও অভিযোগ জমা পড়েনি। এটা অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়।’
ভোট-পরবর্তী হিংসা নিয়ে রাজ্য প্রশাসন কোনও পদক্ষেপ করছে না বলে অভিযোগ তোলে বিরোধীরা। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা হলে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। সেই কমিটিই সব খতিয়ে দেখে ঘরছাড়াদের ঘরে ফেরানোর জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেয়। এরপরও ভোট-পরবর্তী হিংসা নিয়ে সরব হন বিরোধীরা। অভিযোগ তোলেন হাইকোর্টের নির্দেশের পরও অব্যাহত হিংসা। রাজ্য কোনও ব্যবস্থাই নিচ্ছে না। তারপরই কলকাতা হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চে মামলা সরে। ভোট-পরবর্তী হিংসা সংক্রান্ত মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের কমিটিকে গুরু দায়িত্ব দেয়। রাজ্যের পরিস্থিতি ঘুরে দেখে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে রিপোর্ট পেশ করতে বলেন পাঁচ বিচারপতির বিশেষ বেঞ্চ। নির্দেশে জানানো হয়েছিল, রাজ্যের পরিস্থিতি ঘুরে দেখে মানবাধিকার কমিশন ৩০ জুনের মধ্যে রিপোর্ট দেবে আদালতকে। হাইকোর্টে সেই নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আবেদন জানায় রাজ্য সরকার। রবিবার আবেদনই খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
Comments are closed.