Bengal Fast
বিশ্ব মাঝে বাংলা খবর

বিটি বেগুন চাষে কেন্দ্রীয় অনুমোদন, আশঙ্কায় কৃষিবিজ্ঞানীরা

রূপম চট্টোপাধ্যায়

পৃথিবীর কয়েকটি দেশে সয়াবিন, ভুট্টার মতো কয়েকটি ফসল জেনেটিক্যালি মডিফায়েড (জিএম) অর্থাৎ জিনগত পরিবর্তন ঘটিয়ে চাষ করা হত এতদিন। এইগুলি মূলত পশু খাদ্য। এই প্রথম মানুষের একটি প্রিয় সবজি বেগুনকে নিয়ে আসা হল জিম-এর তালিকায়। এর আগে কংগ্রেস জমানার শেষ দিকে এই ব্যাসিলাস থুরিজিয়েনসিস (বিটি) বেগুন চাষের অনুমতি দিতে চেয়েছিল তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু দেশজোড়া প্রতিবাদের জেরে সিদ্ধান্ত থেকে সরে দাঁড়ান মন্ত্রী জয়রাম রমেশ।

এবার দেশের মানুষ যখন করোনা ও লকডাউন নিয়ে বিপর্যস্ত ঠিক তখনই পাকা করা হল বহু বিতর্কিত বিটি বেগুনের বাণিজ্যিক চাষের আয়োজনকে। গত ২০ মে কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রকের অধীন জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যাসেসমেন্ট কমিটি বিটি বেগুন চাষের পরীক্ষামূলকভাবে চাষে অনুমোদন দিয়েছে। ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গ-সহ আটটি রাজ্যকে বিটি বেগুন চাষের অনুমোদন সংক্রান্ত চিঠিও পাঠান হয়েছে। আর এই বিটি বেগুনের বীজ বাজারে আনার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছে মহারাষ্ট্রের জালনার ‘বিজশীতল’ নামে একটি বীজ কোম্পানি। তাদের যুক্তি এই বেগুনে পোকা ধরবে না। ফলে কৃষকের লাভও হবে।

- Sponsored -

বিশ্বের কৃষিবিজ্ঞানীদের আশঙ্কা যে-পদ্ধতিতে এই বিটি ফসল চাষ হয়, সেই পদ্ধতিতে উৎপাদিত ফসলের মধ্যেই বিষ থাকার ফলে মানুষের শরীরে তার দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়তে বাধ্য। বিটি বেগুন মানুষের খাদ্য হিসেবে প্রমাণিত হয়নি। জিনগত পরিবর্তনের কারণে এতে যে বিষ তৈরি হয় তা মানুষের লোহিত কণা ধ্বংস করে দেয়। নারীদের প্রজনন স্বাস্থ্যের জন্য এই বিটি বেগুন ক্ষতিকর। উন্নত দেশগুলি বিটি ফসলকে মান্যতা দিতে রাজি নয়। তাই বিশ্বে মানুষের খাদ্য তালিকায় বিটি ফসলের স্থান নেই।

ভারতে সাবেক তুলো চাষের বদলে বিটি তুলোর চাষ শুরু করার পর কয়েক হাজার কৃষক আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে। তাই সরকারের বিটি বেগুন চাষের অনুমোদনে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। এর বিরোধিতায় রাজনৈতিক দলগুলো চুপ করে থাকলেও দেশের কৃষিবিজ্ঞানীদের একটি বড় অংশ প্রতিবাদ জানিয়েছেন বন ও পরিবেশ মন্ত্রকে। ইতিমধ্যেই ভারতের কয়েকটি জায়গায় লুকিয়ে-চুরিয়ে বিটি বেগুনের চাষ শুরুও হয়েছে। হরিয়ানায় এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় তুমুল বিক্ষোভও দেখিয়েছে পরিবেশ আন্দোলনের কর্মীরা। এদের অভিযোগ, গোপনে যে বিটি বেগুনের চাষ শুরু হয়েছে তার নেপথ্যে আছে কেন্দ্রীয় সরকারের পরোক্ষ ভূমিকা।

রূপম চট্টোপাধ্যায় : সাংবাদিক, পরিবেশকর্মী, কলামিস্ট (মতামত ব্যক্তিগত)
ছবি ঋণ : ইন্টারনেট

Subscribe to our Whatsapp Group for daily news alerts.


You might also like

- sponsored -

Comments are closed.