বিজেপির নবান্ন অভিযানে ধুন্ধুমার, মিছিল থেকে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার পুলিশের!
শুভাশিস মণ্ডল
যুব মোর্চার নবান্ন অভিযান ঘিরে তুলকালাম কাণ্ড। বিজেপিকর্মীদের মিছিল আটকালে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়ার অভিযোগ। শহরের একাধিক এলাকায় জলকামান, লাঠিচার্জ করে মিছিল ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে পুলিশ। সারাদিন তুমুল উত্তেজনা, খণ্ডযুদ্ধের মধ্যেও এদিন নবান্নে পৌঁছানো হল না বিজেপির।
এদিন পূর্ব ঘোষণা মতো যুব মোর্চার মিছিল কলকাতা ও হাওড়া মিলে চার জায়গায় জমায়েত হয়। একটি রাজ্য বিজেপির সদর দফতর সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ থেকে, দ্বিতীয়টি হেস্টিংস থেকে, তৃতীয়টি হাওড়া ময়দান এবং চতুর্থ মিছিলের জমায়েত হয় সাঁতরাগাছি থেকে। এরই মধ্যে দুপুর ১২টায় থেকে মিছিল শুরু হওয়ার কথা থাকলেও, মাঝপথেই অনেক জায়গায় বিজেপি নেতাদের গাড়ি আটকে দেওয়া হয়েছে বলে খবর।
পাশাপাশি বিজেপির যুব মোর্চার নবান্ন অভিযান ঘিরে কড়া পদক্ষেপ নেয় রাজ্য প্রশাসন। সিসি ক্যামেরা ও ড্রোনের মাধ্যমে নজরদারি ছাড়া নবান্নমুখী সব রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। নবান্নের আশেপাশে ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা বলয়ে মুড়ে ফেলা হয়। রাস্তায় পুলিশের ব্যারিকেড, জলকামান, রোবো কপ প্রস্তুতি ছিল সব কিছুরই। বন্ধ করে দেওয়া হয় কোনা এক্সপ্রেসওয়ে, বিদ্যাসাগর সেতু এবং হাওড়া ব্রিজও।
সায়ন্তন বসু, রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে সাঁতরাগাছির দিক থেকে মিছিল এসে প্রথম ব্যারিকেড ভেঙে দেয়। নবান্ন-সহ আশপাশের এলাকা ১৪৪ ধারা জারি আছে বলে মিছিল আটকায় পুলিশ। শুরু হয় তুমুল উত্তেজনা। পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে এগোতে গেলে জলকামান ছুড়তে শুরু করে পুলিশ। এইসময় বিজেপি কর্মীরা পাল্টা ইটবৃষ্টি করতে থাকে পুলিশকে লক্ষ্য করে। আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে তুমুল লাঠিচার্জের পাশাপাশি কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশ। জলকামান ও ধোঁয়ায় অসুস্থ হয়ে বিজেপি নেতা রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ বহু কর্মী।
এদিকে হাওড়া ময়দান থেকেও নবান্ন অভিযান শুরু বিজেপি যুব মোর্চার সর্বভারতীয় নেতা তেজস্বী সূর্য, সৌমিত্র খাঁ। এখানে ৫টি জায়গায় ব্যারিকেড করে পুলিশ। ব্যরিকেড ভেঙেই নবান্নের দিকে এগোতে শুরু করলে শুরু হয় তুমুল উত্তেজনা। পুলিশকে লক্ষ্য করে বিজেপি কর্মীরা ইট ছোড়ে বলে অভিযোগ। ধুন্ধুমার পরিস্থিতির মধ্যে এক বিজেপি কর্মীর কাছ থেকে মেলে ৯ এমএম পিস্তল বলে জানায় পুলিশ। হাওড়া ময়দানে পুলিশকে লক্ষ্য অভিযোগ ওঠে বোমাবাজিরও।
ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয় হেস্টিংস মোড়েও। বিজেপি কর্মীরা ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে বলে অভিযোগ। সূত্রের খবর, এখানেও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি শুরু করে বিজেপি কর্মীরা। পুলিশের বাধা পেয়ে হেস্টিংস মোড়ে বসে পড়েন অর্জুন সিংহ এবং লকেট চট্টোপাধ্যায়। শুরু হয় অবস্থান বিক্ষোভ। এরপর একে একে আসেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়, মুকুল রায়, সব্যসাচী দত্ত, ভারতী ঘোষ প্রমুখ নেতানেত্রীরা।
অন্যদিকে দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বে একটি মিছিল হাওড়া ব্রিজে উঠতেই বাধা দেয় পুলিশ। শুরু হয় লাঠিচার্জ। ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় মিছিল। ফাটানো হয় টিয়ার গ্যাস। এদিকে হাওড়ায় বিজেপি কর্মীর কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘মিছিল থেকে বিজেপি নেতার দেহরক্ষীর আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ এবং সেই আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স আছে।’
Comments are closed.