প্রতীক্ষার অবসান, জয় শ্রীরাম ধ্বনিতে অযোধ্যায় সম্পন্ন ‘ভূমিপূজন’
বীরেন ভট্টাচার্য, নয়াদিল্লি
একটি বৃত্ত যেন সম্পূর্ণ হল বুধবার, সরযূ নদীর তীরে রামমন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের মধ্য দিয়ে। যে বৃত্তের ভরকেন্দ্র আঁকা হয়েছিল ১৯৯২ সালেই। নয়ের দশকে তৈরি হওয়া অযোধ্যা ও রামমন্দির আন্দোলনের জোয়ার এসেছিল দেশজুড়ে, তাতে ভেসে গিয়েছিল দেশের একটা বড় অংশ। সেই বৃত্তের ব্যাসার্ধ আঁকা হল ২০২০-র ৫ অগস্ট। ‘জয় শ্রীরাম’ মন্ত্রোচ্চারণে ৪০ কেজি ওজনের রুপোর ইট পোতার মধ্য দিয়েই সূচিত হল নয়া অধ্যায়। অযোধ্যায় তৈরি হল আরেক পর্ব– রামমন্দির পরবর্তী অযোধ্যা এবং আগের অযোধ্যা। আপাতভাবে নিরীহ, শান্ত ভারতবর্ষের আর পাঁচটা শহরে মতোই সেখানকার বেকার ছেলেমেয়েরাও চাকরি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যের মতো মৌলিক অধিকারের দাবি তুলে থাকে। এহেন সরযূ পারের এই শহরটিকেই নতুন করে সাজিয়ে তুলে এক ইতিহাস রচনার পথে এক ধাপ এগিয়ে গেল মোদি সরকার ও বিজেপি।
সুপ্রিম কোর্টের রায়দানের পর থেকেই বিজেপি ও সরকারের অন্দরে চলতে থাকে প্রস্তুতি। তারমধ্যেই দেশে চলে আসে অতিমারী করোনা ভাইরাস। তবে তারমধ্যেও চলতে থাকে প্রস্তুতি। ৫ অগস্ট রামমন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করার দিন ধার্য করা হয়। রামমন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর বা ভূমিপূজনকে সর্বান্তকরণে আকর্ষণীয় এবং অন্যতম করে তুলতে চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখা হয়নি। তারমাঝেই ভ্রু কুঁচকায় পুরোহিত ও পুলিশকর্মীদের করোনা আক্রান্তের ঘটনা। তবে এসব কিছুতেই দমানো যায়নি রামমন্দির নির্মাতাদের।
রামমন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর বা ভূমিপূজন অনুষ্ঠানে ১৭৫ জন অতিথির অন্যতম মুখ ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, সংঘচালক মোহন ভাগবত, রামমন্দির ট্রাস্টের প্রধান নৃত্যগোপালদাস মহারাজ, উত্তরপ্রদেশের রাজ্যপাল আনন্দীবেন প্যাটেল এবং মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।
এদিনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, ‘সবার মন উদ্বেল হয়ে উঠেছে, পুরো দেশের কাছে এটা আবেগঘণ দিন… কোটি কোটি মানুষের কাছে এই দিনটি ভাবনার বাইরে। রামলালা বছরের পর বছর ধরে তাঁবুতে বাস করেছে। এবার রামভক্তরা বড় মন্দির নির্মাণ করে দিয়েছেন।’
জয় শ্রীরাম মন্ত্রপাঠ করে এদিন ৪০ কেজি রুপোর ইট দিয়ে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তিনি। এদিনের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, ৩০ বছর পর এদিন অযোধ্যার মাটিতে পা দিলেন নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদি।
রামমন্দির নির্মাণ ছিল বিজেপির ইস্তেহার। দিনভর রামমন্দির নির্মাণ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় নানান রকমের মিম ও মন্তব্য ছড়িয়ে পড়ে। তবে কাশ্মীর থেকে শুরু করে নানান বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপের মতোই এটাও ছিল গেরুয়া শিবিরের ইস্তেহারেই।
বিশেষ ঋণ : DD INDIA
Comments are closed.