নিজের বাড়িতেই দুর্ঘটনায় মৃত শিল্পী অতীশ চক্রবর্তী
নিজস্ব সংবাদদাতা : নিজের বাড়িরই ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে আজ ভোরে মৃত্যু হল শিল্পী অতীশ চক্রবর্তী-র। বয়স হয়েছিল ৫৭ বছর। সংবাদপত্র ও প্রকাশনা জগতে সুপরিচিত অতীশবাবু ছিলেন ‘একদিন’ দৈনিকের ভিস্যুয়ালাইজার। বহু বিজ্ঞাপন সংস্থাতেও তাঁর কাজ সমাদৃত। একসময়ে নিয়মিত লেখালিখিও করতেন। বাংলা কবিতার নিবিষ্ট সমঝদার ছিলেন তিনি। ১৯৬৩-র ৩০ সেপ্টেম্বর কাটিহারে জন্ম অতীশ চক্রবর্তীর। কাটিহার রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যামন্দির থেকে ১৯৭৯ মাধ্যমিকের পর মালদা কলেজ থেকে স্নাতক ১৯৮৩-তে। নিজেকে ‘কাটিহারি’ বলে পরিচয় দিতেন তিনি। রেখে গেলেন মা, স্ত্রী ও ভাইকে।
তাঁর মৃত্যুতে শিল্পীমহলে, বার্তাজগতে আজ শোকের ছায়া। মেনে নিতে অসুবিধে হচ্ছে মধুরালাপী, হাস্যমুখ অতীশের মৃত্যুসংবাদ। অনেক স্বপ্ন নিয়ে যে-বাড়ি তিনি তিলে-তিলে তৈরি করেছিলেন উত্তর ২৪পরগনার বিশরপাড়ায়, সেখানেই এ-হেন দুর্ভাগ্য যে ওত পেতে থাকবে— তা ভাবতে পারা যাচ্ছে না। টাইপোগ্রাফি, চিত্রাঙ্কন সব কিছুতেই তাঁর ছিল স্বভাবজ দক্ষতা। দৈনিক সংবাদপত্র ‘একদিন’, ‘সালাম দুনিয়া’য় ভিস্যুয়ালাইজার হিসাবে তাঁর কাজ অন্য মাত্রা এনে দিয়েছিল।
শোকসংবাদে বিহ্বল হয়ে পড়েছেন বিশিষ্ট কবি সমরেন্দ্র দাস, যিনি একদা তাঁর সহকর্মীও ছিলেন, বললেন— ”আজ বিকেলে যখন খবর পেলাম অতীশ আর আমাদের মধ্যে নেই, তখন বুকের ভিতর হু হু করে উঠল। ‘একদিন’ পত্রিকায় নানা কবি-সাহিত্যিক ও সিনেমা ব্যক্তিত্ব নিয়ে দারুণ ছবি এঁকেছিল পেন্সিলে। আমাদের ইচ্ছে ছিল সেগুলো নিয়েই প্রদর্শনী করব। অনেক পরিকল্পনা ছিল। পরে বই করব। মালদায় ওর মায়ের সঙ্গে দেখা করব। বিশরপাড়ার বাড়ি গিয়ে আলপনার রান্না খাব। অতীশ কোনও সুযোগই দিল না। এটা কি যাওয়ার সময় হল?”
প্রকাশনা সংস্থা ‘সহজপাঠ’-এর পক্ষ থেকে তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করা হয়েছে। তাঁরা বললেন যে, মননশীল বইয়ের প্রচ্ছদ ঠিক যেমনটি হওয়া দরকার, অতীশবাবুর তুলির টানে বিষয়ের সেই ভাবটি ফুটে উঠত অনায়াসে।
Comments are closed.