চাল, ডাল, আলু, পেঁয়াজ, ভোজ্য তেল আর অত্যাবশ্যকীয় পণ্য নয়, রাজ্যসভায় পাস বিল
নিজস্ব সংবাদদাতা : রাজ্যসভায় পাস হয়ে গেল অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইনের সংশোধনী বিল। কার্যত বিরোধীশূন্য রাজ্যসভায় সাড়ে ৬ দশকের অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইনে সংশোধনী পাস করিয়ে নিল নরেন্দ্র মোদি সরকার। ফলে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের আওতা থেকে বাদ পড়ল চাল, ডাল, আলু, পেঁয়াজ, তেলবীজ, ভোজ্য তেলের মতো কৃষিপণ্য। উঠে যাবে পণ্য মজুতের ঊর্ধ্বসীমাও। এবার রাষ্ট্রপতি বিলে সই করলে তা আইনে পরিণত হবে। অত্যাবশ্যকীয় পণ্য সংশোধনী বিল আইনে পরিণত হলে মজুতদার বা ব্যবসায়ীরা ইচ্ছেমতো এই সমস্ত পণ্য মজুত রাখতে পারবে বা বিক্রিতে কোনওপ্রকার বাধা থাকবে না।
বিরোধীদের দাবি চাল, ডাল, আলু, পেঁয়াজ, তেলবীজ, ভোজ্য তেলের মতো কৃষিপণ্যে সরকারি নিয়ন্ত্রণ উঠে গেলে বাড়বে কালোবাজারি। পুরোপুরি কর্পোরেট নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে কৃষিপণ্য। কর্পোরেট ব্যবসায়ীরা চাষিদের থেকে কমদামে পণ্য কিনে আকাশছোঁয়া দামে সাধারণ মানুষকে বিক্রি করবে। এর ফলে কৃষকরা তো ক্ষতিগ্রস্ত হবেনই, মধ্যবিত্তের পকেটেও টান পড়বে। যদিও সরকার পক্ষের দাবি, নয়া আইনের জেরে দেশি-বিদেশি বড় সংস্থার বিনিয়োগ আসবে কৃষিক্ষেত্রে। তবে, কোনও জরুরি অবস্থা বা যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে মজুতদারির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারবে সরকার। পাশাপাশি অত্যধিক হারে মূল্যবৃদ্ধি হলে সেটাও নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে সরকার।
১৯৫৫ সালের অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইনে সংশোধনীর প্রস্তাব এনে মোদি সরকার ৫ জুন অধ্যাদেশ জারি করেছিল। লোকসভায় গত ১৫ সেপ্টেম্বর পাস হওয়ার পর আজ রাজ্যসভাতেও ধ্বনি ভোটে পাস হল এই বিল। কেন্দ্রীয় ক্রেতা সুরক্ষা, খাদ্য ও গণবণ্টন দফতরের প্রতিমন্ত্রী দানভে রাওসাহেব দাদারাও রাজ্যসভায় জানিয়েছেন, ‘সংশোধনীর ফলে চাষিরা ফসল উৎপাদন, মজুত, পরিবহণ, বণ্টন ও বিক্রির স্বাধীনতা পাবেন। ফলে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার খুলে যাবে। কর্পোরেট থেকে শুরু করে ছোট ব্যবসায়ীরাও এই কৃষিপণ্যগুলিতে বিনিয়োগ করতে পিছপা হবে না। কর্পোরেটদের আগমন ঘটায় কৃষকরা নিজেদের পণ্যের জন্য আরও বেশি দাম পাবেন। পাশাপাশি কৃষিক্ষেত্রে বিপুল বিনিয়োগের সম্ভাবনার দরজা খুলে যাবে।’
Comments are closed.