প্রয়াত ‘ঋজুদা’ স্রষ্টা বুদ্ধদেব গুহ, শোকের ছায়া সাহিত্যজগতে
নিজস্ব সংবাদদাতা: সাহিত্যজগতে মহীরুহ পতন। প্রয়াত হলেন ‘ঋজুদা’ স্রষ্টা বুদ্ধদেব গুহ। কোভিড পরবর্তী জটিলতায় রাত ১১.২৫ নাগাদ কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হল তাঁর। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। একমাসের বেশি সময় হাসপাতালে ভর্তি থেকে করোনাকে জয় করলেও এবার আর পারলেন না ৷ হাসপাতাল সূত্রে খবর, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে বুদ্ধদেব গুহর।
প্রবীণ সাহিত্যিকের মৃত্যুর খবরে শোকজ্ঞাপন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক শোকবার্তায় মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, ‘বিশিষ্ট সাহিত্যিক বুদ্ধদেব গুহর প্রয়াণে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। তিনি গতরাতে কলকাতায় প্রয়াত হন। বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর।
বাংলা সাহিত্যের অগ্রগণ্য লেখক বুদ্ধদেব গুহর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ কোয়েলের কাছে, কোজাগর, একটু উষ্ণতার জন্য, মাধুকরী, জঙ্গলমহল, চরৈবেতি ইত্যাদি। এছাড়া তিনি বাংলা সাহিত্যের দুটি জনপ্রিয় কাল্পনিক চরিত্র- ঋভু এবং ঋজুদার স্রষ্টা।
পেশায় চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট বুদ্ধদেববাবু পুরাতনী টপ্পা সহ বিভিন্ন সংগীতে পারঙ্গম ছিলেন। তাঁর বহু গল্প-উপন্যাস চলচ্চিত্রায়িত হয়েছে। বিদ্যাসাগর স্মৃতি পুরস্কার, আনন্দ পুরস্কার সহ বহু সম্মানে তিনি ভূষিত হয়েছেন।
তাঁর প্রয়াণে সাহিত্য জগতে এক অপূরণীয় ক্ষতি হল।
আমি বুদ্ধদেব গুহর আত্মীয় পরিজন ও অনুরাগীদের আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।’
১৯৩৬ সালে ২৯ জুন কলকাতায় জন্ম বুদ্ধদেব গুহর ৷ পেশাগত জীবনে চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট হলেও তাঁর ছোটগল্প ও উপন্যাস পাঠককে মুগ্ধ করেছে। বুদ্ধদেব গুহর প্রথম উপন্যাস ‘জঙ্গলমহল’। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ‘মাধুকরী’, ‘কোজাগর’, ‘অববাহিকা’, ‘বাবলি’, ‘পঞ্চ প্রদীপ’, ‘কুমুদিনী’, ‘কুসুম’, ‘বাতিঘর’, ‘চন্দ্রায়ন’, ‘বনবাসর’, ‘সাজঘর’-এর মতো আরও অনেক। তাঁর সৃষ্ট ‘ঋজুদা’ বা ‘ঋভুর’ মতো চরিত্র পাঠকদের মন্ত্রমুগ্ধ করে রেখেছে। বিভূতিভূষণ পরবর্তী অরণ্য সাহিত্যকে অন্য মাত্রা দিয়েছিলেন বুদ্ধদেব গুহ, তবে একদম নিজের মতো করে।
Comments are closed.