কর্মীদের ভ্যাকসিন দিয়ে খোলা যেতে পারে রেস্তোরাঁ, ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর
নিজস্ব সংবাদদাতা : নবান্ন সভাগৃহে ২৯টি বণিক সংগঠনের সঙ্গে বৈঠকে রাজ্যে চলতি বিধিনিষেধ নিয়ে কিছুটা ছাড়ের কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বণিকসভার বৈঠকে টিকাকরণে বিশেষ জোর দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সবার কথা ভেবে আমরা অন্যান্য রাজ্যের মতো লকডাউন করিনি, কার্ফু করিনি। বাজার পুরোপুরি বন্ধ করিনি। এবার থেকে রাজ্যের বাজার হাট নিয়মিত স্যানিটাইজ করা হবে। কোভিডের মধ্যে সমস্যা হচ্ছে, কিছু কিছু লোক বিধিনিষেধ মানে না।’
বণিকসভার তরফ থেকে করোনা পরিস্থিতিতে রেস্তোরাঁ ব্যবসা সমস্যায় পড়ছে বলে মুখ্যমন্ত্রীকে জানানো হয়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরাও চাই রেস্তোরাঁ খোলা থাক বিকেল ৫টা থেকে ৮টা পর্যন্ত। তবে কর্মীদের ভ্যাকসিন দিয়ে রেস্তোরাঁ খোলা যেতে পারে। আপাতত ৫০ শতাংশ কর্মী নিয়ে রেস্তোরাঁ খুলে রাখা যাবে। এছাড়াও সমস্তরকম কোভিড নিরাপত্তাবিধি বজায় রাখতে হবে। বেশি মানুষ যাতে জমায়েত করতে না পারেন, সেটাও দেখতে হবে।’
মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, ‘শপিং মলের ক্ষেত্রেও আংশিক ছাড় দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। ২৫ শতাংশ কর্মী নিয়ে শপিং মল খোলার ব্যাপারেও চিন্তা ভাবনা করছে রাজ্য। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে ১৫ জুনের পর। পাশাপাশি পরিচারিকাদের টিকা দেওয়ার বিষয়টিও ভেবে দেখা হচ্ছে। আটা মিল, রাইস মিল এবং রেশন দোকানের কর্মীদের বিনামূল্যে দেওয়া হবে টিকা। নির্মাণ সংস্থাগুলি ভ্যাকসিন নিয়ে কর্মীদের কাজ করাতে পারে।’
এদিনের বৈঠকে বণিকসভার প্রশংসা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশ বা রাজ্যের বিপর্যয়ে বণিকসভার বড় ভূমিকা রয়েছে। আপনারা নিজেদের কর্মীদের টিকা দিন। ওই টিকা আপনাদেরই কিনতে হবে। আপনারা ধরে নিন, ওই টিকা আপনারা রাজ্য সরকারের বিপর্যয় মোকাবিলার ত্রাণ তহবিলে দিয়েছেন। আপনাদের সেই ভূমিকা পালন করার অনুরোধ করব।’
মুখ্যমন্ত্রী এদিন আরও বলেন, ‘ইতিমধ্যেই আমরা ১ কোটি ৪০ লক্ষ ভ্যাকসিন দিয়েছি। আমরা রোজ ভ্যাকসিন দিয়ে যাচ্ছি ৬০-৭০ হাজার। আমরা সবাইকে ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যাপারে যতটা সম্ভব চেষ্টা করছি। এক একজনকে ভ্যাকসিন দিতে ৬০০ থেকে ১,২০০ টাকা খরচ হচ্ছে। ১.৪৪ কোটি মানুষকে ভ্যাকসিন দিয়েছি বিনামূল্যে। কেন্দ্রের কাছে ৩ কোটি ভ্যাকসিন চেয়েছি। ১৭ লক্ষ পেয়েছি। বাকি ভ্যাকসিন আমাদের কিনতে হচ্ছে। ভ্যাকসিনের উপরেও জিএসটি নিচ্ছে কেন্দ্র। ভ্যাকসিন কিনতে প্রচুর টাকা চলে যাচ্ছে। আমরা বিশেষ করে সুপার স্প্রেডার যেখান থেকে হতে পারে, যেমন পোস্তা বাজারের কর্মচারী, হকার, মৎস্য বিক্রেতা, সবজি বিক্রেতা, গাড়ির ড্রাইভার, কন্ডাকটার, এঁদের নিয়মিত ভ্যাকসিন দিচ্ছি।’
মুখ্যমন্ত্রী এদিন ইয়াসের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত ইটভাটাগুলির শ্রমিকদের পাশে থাকার কথাও ঘোষণা করেন। ইটভাটাগুলি জলে ডুবে যাওয়ার ফলে ব্রিক অ্যাসোসিয়েশন রাজ্য সরকারের কাছে সাহায্য চায়। এরপরই সরকার সাধ্যমতো সাহায্য করবে বলে ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
Comments are closed.