মমতার হাত শক্ত করতে বাংলার বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলকে সমর্থন শিবসেনার
নিজস্ব সংবাদদাতা : রাজ্যে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে কোনও প্রার্থী দিচ্ছে না শিবসেনা। বিধানসভা ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত শক্ত করতে এবং বিজেপির বিরোধিতা করতে তৃণমূলকেই পূর্ণ সমর্থন করবে উদ্ভব ঠাকরের দল। ট্যুইটে ঘোষণা শিবসেনার মুখপাত্র সঞ্জয় রাউতের। শিবসেনার এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে তৃণমূল।
সমাজবাদী পার্টি, আরজেডি-র পর বাংলার বিধানসভা ভোটে এবার তৃণমূলকে পূর্ণ সমর্থনের কথা জানাল শিবসেনা। দলের প্রধান উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে আলোচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন দলের মুখপাত্র। ট্যুইটে মমতাকে ‘বাংলার বাঘিনী’বলে উল্লেখ করেছেন সঞ্জয়। যদিও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের এই সিদ্ধান্তের পর নিজেদের মধ্যে বৈঠকের সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিবসেনার রাজ্য নেতৃত্ব।
— Sanjay Raut (@rautsanjay61) March 4, 2021
২০১৯ সালে মহারাষ্ট্রে সরকার গঠনের সময় বিজেপির সঙ্গে দীর্ঘদিনের জোট ভেঙে যায় শিবসেনার। কংগ্রেস ও এনসিপির সঙ্গে জোট করে মহারাষ্ট্রে কুর্সি দখল করে উদ্ভব ঠাকরে। বাংলায় বাম-কংগ্রেস জোট তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করলেও মমতাকেই সমর্থন করছে শিবসেনা। বাংলার এই নির্বাচনী যুদ্ধকে ‘দিদি বনাম সবার লড়াই’বলে উল্লেখ করেছেন সঞ্জয়। তাঁর অভিযোগ, মমতার বিরুদ্ধে টাকা, পেশীশক্তি ও মিডিয়াকে ব্যবহার করা হচ্ছে। আসন্ন নির্বাচনে মমতাই ফের ক্ষমতায় আসবেন বলে আশাপ্রকাশ করেছে শিবসেনা। ঘাসফুল শিবিরকে জয়ের আগাম শুভেচ্ছাও জানিয়েছে মহারাষ্ট্রের শাসকদল।
যদিও, জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে বাংলার ভোটে অন্তত ১০০জন প্রার্থী দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল শিবসেনা। ট্যুইটে ‘জয় হিন্দ, জয় বাংলা’ লিখে নির্বাচনী লড়াইয়ের কথা বলেছিলেন দলীয় মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত। হিন্দুত্ববাদী দল হিসেবে পরিচিত শিবসেনা তাৎপর্যপূর্ণভাবেই এ রাজ্যের জঙ্গলমহল অর্থাৎ আদিবাসী অধ্যুষিত ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুরের মতো জায়গায় লড়াইয়ের জমি খুঁজেছিল। সপ্তাহ কয়েক আগেই ঝাড়গ্রামে বড় জনসভা করে এই বার্তা দিয়েছিলেন রাজ্যের শিবসেনা নেতারা। বিজেপির হিন্দুত্ববাদের সঙ্গে তাঁদের হিন্দুত্বের ধারণার ফারাক তুলে ধরেছিলেন দলের রাজ্য সম্পাদক অশোক সরকার। কিন্তু নির্বাচন কমিশন বাংলার ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা করার পর আচমকাই সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে মমতাকেই সমর্থনের বার্তা দিল শিবসেনা।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ব্রিগেডে বাম-কংগ্রেস-আইএসএফের সমাবেশের পরদিনই নবান্নে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেন আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব। তৃণমূল নেত্রীর পাশের দাঁড়িয়ে তৃণমূলকে সমর্থনের কথা ঘোষণা করেন লালুপুত্র। বাংলায় বাস করা বিহারের মানুষদের কাছে মমতাকে জেতানোর আর্জিও জানান তিনি। এবার ঘাসফুল শিবিরকে সমর্থনের কথা জানাল শিবসেনা। ইতিমধ্যেই ঘাসফুলকে সমর্থনের কথা ঘোষণা করেছে শরদ পাওয়ারের দল এনসিপি ও অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টি।
একুশের হাইভোল্টেজ নির্বাচনের আগে মমতার শিবির শিবসেনা, আরজেডি, সপা কিংবা এনসিপির সমর্থন পেলেও শিবসেনার লড়াই থেকে সরে দাঁড়ানো একঅর্থে বিজেপিকে প্রত্যাশিত হিন্দু ভোট পেতে সাহায্য করবে, এমনটাই মনে করেছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। স্বাভাবিকভাবেই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ গেরুয়া শিবিরও। বিজেপির মতে, বাংলায় এই দলগুলির কোনও গুরুত্বই নেই। তাই ওরা তৃণমূলকে সমর্থন করল কী না করল, তাতে বাংলার নির্বাচনে কোনও প্রভাব পড়বে না। তবে বাংলার বিধানসভা নির্বাচনে শিবসেনা, আরজেডি, সপা, এনসিপির সমর্থন তৃণমূলকে আদৌও সুবিধা দেবে কিনা, তার উত্তর দেবে ভোটের ফলাফল।
Comments are closed.