‘বাংলায় চাই ডবল ইঞ্জিন সরকার’, হলদিয়ায় রাজীবের সুর মোদির গলায়
নিজস্ব সংবাদদাতা : একুশের নির্বাচনকে লক্ষ্য করে হলদিয়ায় প্রথম সভা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সভার প্রথম থেকেই বাংলার তৃণমূল সরকারের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তোপ দাগলেন মোদি। প্রধানমন্ত্রী এদিন বলেন, ‘সিপিএম অত্যাচার করেছে, মমতা দিয়েছেন নির্মমতা, বাংলায় চাই ডবল ইঞ্জিন সরকার।’
হলদিয়ার সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদি প্রথমেই বলেন, ‘আমার প্রিয় মা, বোন ভাই ও বন্ধুরা মেদিনীপুরের এই পবিত্র মাটিতে আসতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি। শহিদ মাতঙ্গিনী, বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসুর রক্তে রক্তিম হয়েছে এই ভূমি। এই মাটির বীর সন্তান বিদ্যাসাগর মহাশয় বাঙালিকে বর্ণ পরিচয় দিয়েছে। সতীশচন্দ্রের হাতে তৈরি হলদিয়া বন্দর। মেদিনীপুরের মাটির গুণে আমি মুগ্ধ।’
Speaking in Haldia. Watch. https://t.co/jLYjLBbFJQ
— Narendra Modi (@narendramodi) February 7, 2021
এদিনের সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে টার্গেট করে নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘ভারতমাতার জয়ধ্বনি দিলেই রেগে যান দিদি। কিন্তু দেশের বিরুদ্ধে যাঁরা বিষ ঢেলে যাচ্ছেন, তাঁদের বিষয়ে তো কোনও কথাই বলছেন না। যাঁরা মা-মাটি-মানুষের কথা বলেন আজ ভারতমাতার জন্য কোনও আবেগ নেই তাঁদের।’ মোদি আরও বলেন, ‘মমতার হাত ধরে বাংলায় বামেদের অত্যাচারের নীতিই পুনর্জীবন পেয়েছে। বাংলায় দরিদ্র মানুষের সংখ্যা ক্রমশ বেড়ে চলেছে। একসময় বাংলার শিক্ষা দেশকে দিশা দেখিয়েছিল। সেই বাংলার গতি আজ ঠিক নেই। যতটা এগিয়ে ছিল তা আর নেই। সেই গতি বজায় থাকলে আজ বাংলা কোথায় পৌঁছে যেত। সেগুলি কিছুই হয়নি।’
কেন্দ্রের আয়ুষ্মান ভারত থেকে কিসান নিধি সম্মান প্রকল্প নিয়েও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে বিঁধলেন নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, ‘মমতাদির সরকার যে গরিব মানুষের জন্য একেবারে ভাবে না, তার অন্যতম উদাহরণ হল আয়ুষ্মান যোজনা থেকে বাংলার মানুষকে বঞ্চিত রাখা। ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত সুবিধা পেতে পারতেন সকলে। কিন্তু এখানকার সরকার বাংলায় কেন্দ্রের প্রকল্প বাস্তবায়িত হতে দিচ্ছে না। নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে সাধারণ মানুষের কল্যাণ আটকে দিচ্ছে যারা, তাদের উদ্দেশ্য সকলের কাছেই পরিষ্কার। করোনা ভাইরাসের সময় লাখ লাখ-কোটি কোটি দেওয়া হয়েছে। দেশের ১০ কোটি ছোট কৃষক সেই টাকা পেয়েছেন। তাতে পশ্চিমবঙ্গের লাখ-লাখ পরিবার থাকতে পারত। কিন্তু তা হয়নি। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আপত্তিতে তা হয়নি। এখন কৃষকরা চেপে ধরেছেন বলে বাধ্য হয়ে এখন শুধু দেখানো সম্মতি দিয়েছে মমতা সরকার।’
মোদি বলেন, ‘এখন বাংলা আধুনিকতা চায়। গত ১০ বছরে এখানকার সরকার কটা কারখানা বানিয়েছে? স্টিল প্ল্যান্টগুলির কী হল? এখানকার রাজনীতি বাংলার বৃদ্ধির গতি কমিয়ে দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে আসল পরিবর্তন হবে। পরিবর্তন আদতে কী হয়, তা দেখাবে বিজেপি সরকার। সেই প্রমাণ তো পাচ্ছে ত্রিপুরা। দেশের বিভিন্ন রাজ্যে সপ্তম বেতন কমিশন লাগু হয়েছে। এখানে এখনও সপ্তম বেতন কমিশন কার্যকর হয়নি। এমনকী আমায় তো বলেছে যে এখানকার কর্মচারীরা সময় মতো বেতনও পান না। বাংলার মানুষ তো ফুটবল ভালোবাসেন। তৃণমূল অনেক ‘ফাউল’ করেছে, খুব শীঘ্রই বাংলা তৃণমূলকে লাল কার্ড দেখাবে।’
Comments are closed.