বাড়ি ফিরল ভাগলপুরের মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক
নিজস্ব সংবাদদাতা : মানবিকতার নজির তৈরি হল কেশপুরের মুগবসানে। মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় সোমবার সকালে এক যুবককে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার কেশপুর ব্লকের মুগবসান বাজারে ঘুরাঘুরি করতে দেখে স্থানীয় ব্যবসায়ী শেখ কালো, শেখ সেরিফুল হোসেন, সঞ্জিত পাল, শেখ আজিবুল। তাঁরা তাঁকে ডেকে খাবার দেয়। পরে অমৃতপুর মসজিদের ইমাম মৌলানা শেখ মহম্মদ এবাদুল্লা ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন টার্গেট ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সদস্য শ্যামসুন্দর পোড়্যা ও শেখ মইনুল ইসলাম তাঁর নামধাম জিজ্ঞেস করলে, সে হিন্দিতে অস্পষ্ট ভাবে নিজের নাম বলে সুরাজ। ঠিকানা বিহারের ভাগলপুর জেলার সুলতানগঞ্জ থানায়।
স্থানীয় যুবকরা ওই নামধাম শুনে গুগল সার্চ করে ও ওই যুবকের বর্ণিত বিহারের সুলতানগঞ্জ থানার ফোন নম্বরে যোগাযোগ করলে থানা থেকে জানানো হয়, ওই নামে তাঁদের থানায় নিখোঁজ ডায়েরি হয়েছে। কিছুক্ষণ পরে মানসিক ভারসাম্যহীন যুবকটি একটি ফোন নং বলে। সেই নম্বরে যোগাযোগ করলে যুবকটির বাড়ির লোক ফোন ধরে। তারপর স্থানীয়রা যুবকটির বাড়ির লোকের সঙ্গে হোয়াটস্ অ্যাপে ভিডিয়ো কল করে মানসিক ভারসাম্যহীন যুবককে দেখান। ভিডিয়ো ওই যুবকের মা চিনতে পেরে কান্নাকাটি শুরু করে দেন। যুবকটির বাড়ি থেকে ফোনে স্থানীয়দের জানানো হয়, যুবকটিকে যেন আটকে রাখা হয়। এরপর বিহার থেকে ওই যুবকের মা, জামাইবাবু ও দাদা বুধবার সকালে কেশপুর থানার মুগবসান গ্রামে আসেন। তাদেরকে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা, যুবকবৃন্দ ও টার্গেট ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সদস্যরা মায়ের হাতে হারানো সন্তানকে তুলে দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত যুবকটি টার্গেট ওয়েলফেয়ার সোসাইটির তত্ত্বাবধানে ছিল। ছেলেকে তাঁর কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য বাংলার যুবকদের অশেষ ধন্যবাদ জানান ওই যুবকের মা। পাশাপাশি তিনি মুগবাসান টার্গেট ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সদস্যদের, মসজিদের ইমাম শেখ এবাদুল্লা-সহ সমস্ত ব্যক্তিদের ধন্যবাদ জানান, যাঁরা প্রথম থেকে তাঁর ছেলেকে ডেকে খাওয়ান ও নামধাম জিজ্ঞেস করেন এবং থাকার বন্দোবস্ত করেন।
এদিন দুপুরের হারানো সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে বিহারের ভাগলপুরে জেলার সুলতানগঞ্জের কুমাইঠা গ্রামের পথে রওনা দেন যুবকের মা ও অন্যান্য আত্মীয়রা। যুবকটির বাড়ির আর্থিক অবস্থা ভালো নয়, তাই মুগবসানের যুবকরা পরিবারের হাতে কিছু আর্থিক সাহায্য ও শুকনো খাবারও তুলে দেন।
Comments are closed.