বিহার ভোটে সিপিআই (এমএল) লিবারেশন-এর সাফল্য এ রাজ্যে প্রাসঙ্গিকতা বাড়িয়েছে
রূপম চট্টোপাধ্যায়
বিহারে এনডিএ তথা বিজেপি-ইউজেডি জোট কোনওমতে তাদের সরকার গঠন করেছে। এই সাফল্য তাদের স্বস্তি দিচ্ছে না। একক দল হিসেবে বিরোধী আরজেডি সব চেয়ে বেশি আসন পাওয়ায় বিহারে বিজেপিকে চাপে পড়তে হয়েছে। আর অন্যদিকে বিহারে ২৯টি আসনে লড়ে বামেরা ১৬টি আসনে জয়ী হয়েছে। বিহারে এই জয় বাম শক্তিকে অনেকটাই উজ্জ্বীবিত করেছে।
বামপন্থী দলগুলি শুধু ভোটের লড়াইয়ে থেমে না থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের শ্রম বিল, কৃষি বিল ও সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিরুদ্ধে আগামী ২৬ নভেম্বর দেশব্যাপী সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ-সহ দেশের নানা রাজ্যে সিপিআই (এমএল) লিবারেশন ধর্মঘট সফল করতে তৎপরতা জারি রেখেছে। এই রাজ্যে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য নিজে বিভিন্ন প্রান্তে ধর্মঘটের পক্ষে প্রচার সভা করছেন।
রবিবার সন্ধ্যায় হুগলির কোননগরে এক প্রচার সভায় বক্তব্য রাখেন দীপঙ্কর ভট্টাচার্য। তিনি বিজেপিকে দেশ ও মানুষের প্রধান শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করে সমস্ত বাম ও গণতান্ত্রিক শক্তিকে আরএসএস-বিজেপির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। হুগলির এই অঞ্চলগুলোতে এক সময় সিপিএমের অসীম প্রভাব ছিল। পরে মাথা তোলে তৃণমূল কংগ্রেস। পঞ্চায়েত থেকে পার্লামেন্ট এখনও তৃণমূলের দখলে। কিন্তু তৃণমূলের বিরুদ্ধে চুরি দুর্নীতির অভিযোগ ও অন্যদিকে বিজেপির সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বাতাবরণ তৈরি করে দেশের সম্পদ বেঁচে দেওয়ার অভিযোগ তীব্র হচ্ছে। এই অবস্থায় নকশালপন্থী রাজনীতির প্রতি কিছু মানুষের বাড়তি আগ্রহ তৈরি হচ্ছে। এদিনের প্রচার সভার বক্তা ছিলেন অল ইন্ডিয়া স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন (আইসা) নেতা সৌরভ রায়। এই প্রচার সভায় অন্যতম বক্তা ছিলেন দলের পলিটব্যুরো সদস্য কার্তিক পাল ও সিপিআই (এমএল) লিবারেশনের হুগলি জেলা সম্পাদক প্রবীর হালদার।
এই সভায় দীপঙ্কর ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, “বিহারে বিজেপির সরকার গড়াকে আটকানো যায়নি ঠিক কিন্তু বিরোধীদের প্রবল চাপে এক দুর্নীতিগ্রস্থ বিধায়কে শিক্ষামন্ত্রীর পদ থেকে তিন দিনের মধ্যে সরে যেতে হয়েছে। নরেন্দ্র মোদি বিরোধীশূন্য ভারত চাইছেন আর বিহারে শক্তিশালী বিরোধী পক্ষ তৈরি হয়েছে। এটাই বিহার নির্বাচনের তাৎপর্য।” বাংলায় তিনি, তৃণমূলের দুর্নীতি ও বিজেপির জনবিরোধী নীতিগুলির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ বাম আন্দোলন গড়ে তোলার কথাও বলেছেন।
Comments are closed.