আন্দোলনের রূপরেখা তৈরি করতে দিল্লিতে ‘কৌশল’ বৈঠক বিজেপির
বীরেন ভট্টাচার্য, নয়াদিল্লি
বিধানসভা নির্বাচনের দলের আন্দোলন এবং আগামী কয়েকমাসে বিভিন্ন কর্মসূচির রূপরেখা তৈরি করতে দিল্লিতে কৌশল বৈঠক করল বিজেপি। আগামী কয়েকমাসে ফের কলকাতায় বৈঠক করবেন রাজ্য নেতারা, সেখাানে আবারও একই বিষয়ে আলোচনা হবে বলে জানানো হয়েছে দলের তরফে।
সোমবার দলের কেন্দ্রীয় নেতা শিবপ্রকাশ, অরবিন্দ মেনন, বিএল সন্তোষ, কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের মতো নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়রা। পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, “মাননীয় অমিত শাহের সফরের পর সারা বাংলায় একটা সাড়া পড়ে গিয়েছে, স্বাভাবিকভাবেই কোভিডের জন্য আমরা এই ধরনের কাজ থেকে পিছিয়ে ছিলাম, যার জন্য আমরা চার-পাঁচ মাস পিছিয়ে গিয়েছি। আপাতকালীনভাবে নভেম্বর-ডিসেম্বরে যে কাজগুলি করার, সেগুলির একটা সূচি তৈরি হয়েছিল। তা নিয়ে কবে কী হবে, বিস্তারিত আলোচনা করে ঠিক করা হল এখানে”। আগামী ১০ থেকে ১২ দিনের মধ্যে আবার কলকাতায় বৈঠক করা হবে। সেখানে সংগঠন সাজানো, সেগুলিকে বুথস্তর পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া, স্থানীয়স্তরে সেগুলিকে বাস্তবায়ন করা, দলের আন্দোলন এবং আদর্শ রূপান্তরিত করার মতো বিষয়গুলি আলোচনা হবে কলকাতার বৈঠকে। অর্থাৎ লাগাতার ধারাবাহিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দলীয় সংগঠন এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কৌশল নিয়েছে বিজেপি।
এবারের রাজ্য সফরে বাঁকুড়া বিভীষণ হাঁসদার বাড়িতে পাত পেড়ে মধ্যাহ্নভোজ সেরেছেন বিজেপি শীর্ষ নেতা তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। গতবার উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়ে গীতা মাহালির বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ সেরেছিলেন অমিত শাহ। দিন কয়েক আগে সেই গীতা মাহালিকে রাজ্য পুলিশের হোমগার্ড পদে চাকরি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই পদক্ষেপের এদিন সমালোচনা করেন দিলীপ ঘোষ। তবে বিভীষণ হাঁসদার রাজনৈতিক পদক্ষেপ নিয়ে কোনও মন্তব্য সেভাবে না করলেও, তাঁর পরিবারের আতিথেয়তার প্রশংসা করেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, “ওনারা ঠিক করেছেন, আমরা যাঁদের বাড়ি যাব, তাঁদেরকে হয় চাকরি দেবেন, নাহলে জোর করে তাঁদের পার্টিতে যোগ দেওয়াবেন।”
মাসখানেক ধরে শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে জল্পনা ছড়িয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। বঙ্গ রাজনীতির আলোচনার ভরকেন্দ্র এই মুহূর্তে পূর্ব মেদিনীপুরের আধিকারী পরিবারের এই সন্তান। জেলায় জেলায় “আমরা দাদার অনুগামী” বলে পোস্টার পড়েছে, এই নিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, “এটা আমাদের পার্টির ব্যাপার নয়, তিনি তৃণমূলের নেতামন্ত্রী রয়েছেন, তৃণমূলে এমন ঘটনা ঘটেই থাকে। আরও হবে, সেটা ওদের সমস্যা আমাদের নয়।”
আগামী কয়েকমাস ধরে ধারাবাহিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যাবে রাজ্য বিজেপি। বুথস্তর পর্যন্ত কমিটি গঠন করা থেকে শুরু করে দলের দায়িত্বভাগ করে দেওয়া মতো কাজগুলি বকেয়া রয়েছে। সেগুলি খুব দ্রুত সেরে ফেলে বিধানসভা নির্বাচনে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে গেরুয়া শিবির।
Comments are closed.