রাজ্যের সব পুজোমণ্ডপ দর্শকশূন্য রাখার নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের
শুভাশিস মণ্ডল
করোনা আবহে ঐতিহাসিক রায় কলকাতা হাইকোর্টের। রাজ্যের ছোট-বড় সব পুজোমণ্ডপই নো এন্ট্রি বাফার জোন। ছোট মণ্ডপ হলে তার ৫ মিটারের মধ্যে এবং বড় মণ্ডপ হলে তার ১০ মিটারের মধ্যে কোনও দর্শনার্থী প্রবেশ করতে পারবে না। মণ্ডপে ঢুকতে পারবেন শুধু পুজো উদ্যোক্তারাই। তাও একসঙ্গে বড় মণ্ডপে ২৫ ও ছোট মণ্ডপে ১৫জনের বেশি থাকা যাবে না। তাদের নাম আগে থেকে পুলিশের কাছে নথিভুক্ত করতে হবে। যে ৩৪ হাজার পুজো কমিটি সরকারি অনুদান নিয়েছেন তাদের প্রত্যেককে হলফনামা দিতে হবে। একইসঙ্গে হাইকোর্ট যে রায় দিল তা বড় বড় করে লিখে প্রতিটি পুজো মণ্ডপের বাইরে ঝোলাতে হবে। জনস্বার্থ মামলায় নির্দেশ বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চের।
করোনা পরিস্থিতিতে দুর্গাপুজো বন্ধ রাখার আবেদন জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন হাওড়ার বাসিন্দা অজয়কুমার দে। তিনি আদালতে জানান, করোনা অতিমারীর জেরে মাসের পর মাস বন্ধ স্কুল-কলেজ। একসঙ্গে জমায়েত যাতে না হয় তার জন্যই ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন। ইতিমধ্যেই বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। দুর্গাপুজো হলে জনপ্লাবন নামবে। তখন সংক্রমণ ঠেকানো কঠিন হয়ে পড়বে। এই পরিস্থিতিতে পুজো হোক কিন্তু উৎসব নয়।
গত কয়েকদিন ধরে চলা এই মামলায় হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ পর্যবেক্ষণ করে দেখেছে, জনপ্লাবন হলে করোনা সংক্রমণ দ্রুত হারে বাড়বে। ইতিমধ্যেই কলকাতা শহরের বেশকিছু পুজো মণ্ডপে দেখা গেছে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করেই মানুষেরা জড়ো হয়েছে। যা যথেষ্ট চিন্তার বিষয় বলে জানিয়েছেন বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন মন্তব্য করেন, ‘‘অতিমারী রোখার জন্য যে গাইডলাইন রয়েছে তাতে সদিচ্ছার অভাব নেই। কিন্তু তার বাস্তবে কোনও প্রয়োগ নেই।’’
হাইকোর্টের নির্দেশ, সমস্ত পুজো মণ্ডপের বাইরে ব্যারিকেড করে নো এন্ট্রি বোর্ড লাগাতে হবে। সমস্ত পুজো মণ্ডপ কনটেনমেন্ট জোন বলে জানাতে হবে। পাশাপাশি হাইকোর্টের নির্দেশ কতটা মানা হল, কতটা পুলিশ তার কাজ সঠিকভাবে করতে পারল, সেই রিপোর্ট রাজ্য পুলিশের ডিজি এবং কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। আগামী ৫ নভেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।
Comments are closed.