বিশ্ব ক্ষুধাসূচকে ভারতের অবস্থা গুরুতর, এগিয়ে পাকিস্তান-বাংলাদেশ!

বীরেন ভট্টাচার্য, নয়াদিল্লি
করোনা ছড়িয়ে পড়া, জিডিপি বৃদ্ধির হার নিয়ে জেরবার পরিস্থিতির মধ্যেই আন্তর্জাতিক ক্ষুধাসূচক রিপোর্টে ভারতের স্থান গুরুতর বলে প্রকাশিত হল। সর্বোপরি ভারতের থেকে এগিয়ে রয়েছে পাকিস্তান, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কার মতো দেশগুলি। ১০৭টি দেশের মধ্যে ভারত রয়েছে ৯৪ নম্বরে, সেখানে পাকিস্তান রয়েছে ৮৮ নম্বরে এবং বাংলাদেশ ৭৫ নম্বরে।
The country needs to take note of two pieces of news this week. @narendramodi ji's wealth increased by Rs 36 lakh in one year and India has ranked 94th out of the 107 countries in Global Hunger Index. #WorldFoodDay2020https://t.co/29G4ABwBfc
— Mausam Noor | মৌসম নুর (@MausamNoor) October 16, 2020
চলতি বছরে প্রকাশিত আন্তর্জাতিক ক্ষুধাসূচক রিপোর্টে দক্ষিণ এশিয়ার বেশিরভাগ দেশের থেকে নীচে রয়েছে ভারত। নতুন তালিকায় এমনটাই উল্লেখ করা হয়েছে। ১০৭টি দেশের মধ্যে করা সমীক্ষা-রিপোর্টে ভারতের স্থান হয়েছে ৯৪ নম্বরে। ভারতের থেকে এগিয়ে রয়েছে পাকিস্তান, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, মায়নামার। প্রতিবেশী দেশগুলির মধ্যে পাকিস্তান রয়েছে ৮৮ নম্বরে, বাংলাদেশ ৭৫, নেপাল ৭৩, মায়নামার ৭৮ এবং ৬৪ নম্বরে রয়েছে শ্রীলঙ্কা। ভারতের থেকে খারাপ অবস্থায় রয়েছে শুধুমাত্র আফগানিস্তান, তারা রয়েছে ৯৯ নম্বরে। তবে ভুটান কত নম্বরে রয়েছে বা সেখানকার পরিস্থিতি জানা যায়নি। আন্তর্জাতিক ক্ষুধাসূচকের তালিকা তৈরি করা হয়, “আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ক্ষুধা পরিমাপ এবং লক্ষ্য রাখার জন্য, যা জাতীয় এবং আঞ্চলিকস্তরে করা হয়ে থাকে।” এই গণনার কাজে যুক্ত হয় রাষ্ট্রসংঘ-সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা।
সমীক্ষার রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ার অঞ্চলগুলিতে শিশুদের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ এবং তারমধ্যে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি ভারতে। গত বছরে এই হার ছিল ২০.৮ শতাংশ, যদিও সামান্য উন্নতি করে এবারে তা হয়েছে ১৭.৩ শতাংশ। শিশুদের সুষমভাবে বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রেও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলি খারাপ অবস্থার মধ্যে রয়েছে বলে উল্লেখথ করা হয়েছে রিপোর্টে। বলা হয়েছে, “১৯৯১ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত তথ্যে দেখা গিয়েছে, বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল এবং পাকিস্তানে শিশুদের সঠিকভাবে বেড়ে না ওঠার মূল কারণ বাড়িতে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন বিষয় না পাওয়া, দরিদ্রতা এবং সঠিকভাবে খাদ্য না পাওয়া, বাড়ি থেকে ঠিকমতো শিক্ষা না পাওয়া এবং পরিবারের দরিদ্রতা।”
তবে চিন্তার সঙ্গে সঙ্গে একটি বিষয়ে সুখবর দিয়েছে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি। ভারতে পাঁচ বছরের নীচে শিশুদের মৃত্যুর হার কমেছে, যদিও তারা উল্লেখ করেছে, এর মানে এই নয় যে সমস্যা মিটে গিয়েছে। রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, “এই সমযের মধ্যে পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশুমৃত্যুর সংখ্যা কমিয়েছে ভারত, বড় সংখ্যায় কমিয়েছে জন্মগতভাবে শ্বাসকষ্ট, শিশুর পরিচর্যা, নিউমোনিয়া বা ডায়েরিয়ায় মৃত্যুর হার। যদিও, অপরিণত বা জন্মের সময় ওজন কম থাকার কারণে মৃত্যুর হার বেড়েছে, বিশেষ করে গরিব রাজ্য এবং গ্রামীণ এলাকাগুলিতে। পরিণতভাবে জন্ম নেওয়া বা নবজাতকের ওজন কম থাকা দূর করাকেই পাঁচ বছরের নীচে শিশুমৃত্যুর অন্যতম কারণ কারণ বলে ধরা হয় ভারতে। এছাড়াও প্রসবকালে আরও যত্ন নেওয়া, শিক্ষা, পুষ্টি এবং রক্তাল্পতা ও তামাক সেবন কমাতে হবে, এই হার কমাতে।”
Comments are closed.