জনসাধারণের চলাচলের রাস্তা আটকে অবরোধ চলতে পারে না, শাহিনবাগ নিয়ে রায় সুপ্রিম কোর্টের
বীরেন ভট্টাচার্য, নয়াদিল্লি
‘বিক্ষোভ প্রতিবাদ একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া, তবে তার নামে দিনের পর দিন রাস্তা আটকে বিক্ষোভ চলতে পারে না।’ নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে দিল্লির শাহিনবাগে বিক্ষোভ নিয়ে এমনই রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট।
নাগরিকত্ব সংশোধন আইনের বিরুদ্ধে যে বিক্ষোভের ঢেউ উঠেছিল দেশজুড়ে, তার তীব্রতা সব চেয়ে বেশি ছিল রাজধানী দিল্লিতে। শাহিনবাগের বিক্ষোভ নজর কেড়েছিল জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের। প্রায় তিন মাস ধরে চলা শাহিনবাগ আন্দোলন থেকেই টাইম ম্যাগজিনে ২০২০ সবচেয়ে প্রভাবশালীদের তালিকায় উঠে এসেছিল বিক্ষোভ যোগ দেওয়া ৮০ বছরের বিলকিস দাদির নাম।
এদিন শীর্ষ আদালত গণতন্ত্র এবং বিক্ষোভ প্রতিবাদ একসঙ্গে চলে বলে জানিয়ে রায়ে জানায়, দিনের পর দিন বিক্ষোভের নামে রাস্তা আটকে রাখা যাবে না। পাশাপাশি এই ধরনের ঘটনার ক্ষেত্রে আদালতের নির্দেশের অপেক্ষা না করে প্রশাসনকে পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এদিন বিচারপতিরা বলেন, “আমরা পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিচ্ছি যে, সে দিল্লির শাহিনবাগ হোক, বা যে কোনও জায়গায়ই হোক অনির্দিষ্টকাল পাবলিক প্লেস আটকে রাখা যাবে না। এই ধরনের প্রতিবাদ গ্রহণযোগ্য নয়, প্রশাসনকে এক্ষেত্রে পদক্ষেপ করতে হবে। এই ধরনের জায়গা বাধাহীন করে তুলতে হবে।”
এদিন শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয় কিষাণ কউল, বিচারপতি অনিরুদ্ধ বোস, বিচারপতি কৃষ্ণ মুরারির বেঞ্চ বলেন, “ব্যাপক সংখ্যায় মানুষের, রাস্তা বা এই ধরনের পাবলিক প্লেসে বিক্ষোভ বড় সংখ্যায় মানুষের অসুবিধা সৃষ্টি করে এবং তাঁদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়। এটা আইনত অনুমতি যোগ্য নয়।”
গত বছর ডিসেম্বরে শাহিনবাগে কেন্দ্রীয় সরকারের আনা নাগরিকত্ব আইন এবং জাতীয় নাগরিকপঞ্জির বিরুদ্ধে জমায়েত হন হাজার খানেক মানুষ, তাতে ছিলেন প্রচুর মুসলিম মহিলা। এই বিক্ষোভের ফলে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে জিডি বিড়লা মার্গ রাস্তা। ওই জায়গা ছেড়ে দিয়ে বিকল্প কোনও জায়গায় বিক্ষোভ করার প্রস্তাবে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে মধ্যস্থতা করার জন্য আইনজীবী সঞ্জয় হেগড়ে, সাধনা রামচন্দ্রন এবং প্রাক্তন আমলা ওয়াজাত হাবিবুল্লাহকে নিয়োগ করে শীর্ষ আদালত। ফেব্রুয়ারিতে তাঁদের রিপোর্ট জমা দেয় ওই কমিটি।
Comments are closed.