Bengal Fast
বিশ্ব মাঝে বাংলা খবর

হাতরাস ক্ষোভে ‘সংস্কারে’র কথা বলে বিতর্কে বিজেপি বিধায়ক

বীরেন ভট্টাচার্য, নয়াদিল্লি

রবিবারও দিনভর খবরে রইল হাতরাস। শনিবারই হাতরাসের ঘটনায় সিবিআই তদন্তের সুপারিশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। এদিনও উত্তরপ্রদেশ সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক সমালোচনার তির ছুটতে থাকে লখনউ অভিমুখে। ডিএমকে নেত্রী তথা সাংসদ কানিমোঝি বলেন, ‘হাতরাসের ঘটনা ধামাচাপা দিতে চাইছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। পুলিশের মেয়েটির দেহ দাহ করা এবং সাংবাদিকদের ওপর আক্রমণের ঘটনা নিন্দনীয়। ওখানে যে সমস্ত রাজনৈতিক নেতানেত্রী গিয়েছিলেন তাঁদের ওপরেও হামলা চালানো হয়েছে।’ ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ওই যুবতীকে ধর্ষণ করা হয়নি।

ভীম আর্মি প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদ

রবিবার সকাল থেকেই নির্যাতিতার বাড়ির সামনে ধর্নায় বসে পড়ে অভিযুক্তের ঘনিষ্ঠ, পরিবার-সহ প্রায় ৫০০ জন। অভিযুক্তদেরই “ন্যায় বিচার”-এর দাবিতে বিক্ষোভ দেখানো হয়। অন্যদিকে এদিন হাতরাসের বুল গড়হি গ্রামে গিয়ে নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন ভীম আর্মির প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদ। পরিবারটির ‘Y’ ক্যাটাগরি নিরাপত্তা দাবি করেন তিনি। ভীম আর্মি সুপ্রিমো বলেন, ‘এই পরিবারটিকে ওয়াই ক্যাটাগরির নিরাপত্তা দেওয়া হোক। নাহলে তাঁদের আমি আমার বাড়ি নিয়ে যাব। তাঁরা এখানে নিরাপদ নন। আমরা সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির তত্ত্বাবধানে তদন্ত চাই।’

এদিন হাতরাসে নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যায় সমাজবাদী পার্টি এবং রাষ্ট্রীয় লোকদলের প্রতিনিধিরা। দুই দলের পাঁচ জন করে প্রতিনিধিকে গ্রামে যেতে বলা হয়। যদিও পুলিশের অভিযোগ, তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়। ব্যারিকেড ভাঙার পাশাপশি পাথরও ছোড়া হয়। এদিকে নির্যাতিতার বাবার শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় বিশেষ তদন্তকারী দলের অনুরোধে এদিন তাঁদের বাড়িতে যায় মেডিক্যাল টিম। অন্যদিকে যে জায়গায় মেয়েটিকে ধর্ষণ করা হয়, সেখানে যান পুলিশ সুপার বিনীত জয়সওয়াল। পাশাপাশি নির্যাতিতার বাড়ি যায় সিট-এর তদন্তকারী দলও। মৃতার পরিবারের সদস্যদের বয়ান রেকর্ড করেন তদন্তকারীরা।

- Sponsored -

হাতরাসের ঘটনায় গোটা দেশ যখন ফুঁসছে, সেই সময় আগুনে ঘৃতাহুতি দেন উত্তরপ্রদেশের বালিয়ার বাইরিয়া কেন্দ্রের বিধায়ক সুরেন্দ্র সিং। তাঁর মতে, শাসনের মাধ্যমে নয়, মূল্যবোধের মতো শিক্ষা দিলে তবেই ধর্ষণের মতো ঘটনায় রাশ টানা যাবে। একটি ভিডিয়োতে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘এই ধরনের ঘটনা সংস্কার দিয়েই রোখা যাবে, শাসন বা তলোয়ার দিয়ে আটকানো অসম্ভব। সরকারও পারবে না। সব বাবা-মা’র ধর্ম হল, নিজের কমবয়স্ক এবং যুবতী মেয়েদের সংস্কারের আবহে বড় করে তোলা। সংস্কারের মাধ্যমেই শালীন ব্যবহার শেখানো উচিত। সরকার ও সুশিক্ষার মেলবন্ধনে একটি সুন্দর দেশ গড়ে উঠতে পারে।’

হাতরাসের ঘটনায় সিবিআই তদন্তের সুপারিশ করা হলেও তার ওপর ভরসা নেই বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির। বিভিন্ন মহল থেকে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির তত্ত্বাবধানে সিবিআই তদন্তের দাবি করা হয়েছে। সোমবার চাঁদনি চক জেলা কংগ্রেস কর্মীদের নিয়ে রাজঘাটে ধর্নায় বসছেন দিল্লি প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সভাপতি অনিল কুমার। সেখানেই হাতরসের ঘটনায় ‘অমানবিক’ ব্যবহারের প্রতিবাদ জানানো হবে।

এদিকে হাতরাসের ঘটনাকে হাতিয়ার করে যোগী এবং কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের ওপর চাপ বাড়াতে কোনওরকম কসুর করতে চায় না বিরোধীরা। পাশাপশি ‘রণং দেহী’ মেজাজে মাঠে নেমে দলের কর্মীদের প্রিয়াঙ্কা গান্ধি রক্ষা করার চেষ্টাও দলের অভ্যন্তরে বাহবা কুড়িয়েছে। সব মিলিয়ে ২০২২-এ উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের সব চাইতে বড় রাজ্যে নিজেদের পায়ের তলার মাটি শক্ত করতে এমন ‘সুযোগ’ হাতছাড়া করতে চায় না আকবর রোড।

Subscribe to our Whatsapp Group for daily news alerts.


You might also like

- sponsored -

Comments are closed.