Bengal Fast
বিশ্ব মাঝে বাংলা খবর

হাতরাসের ঘটনায় উত্তাল দেশ, উসকে দিল নির্ভয়া আন্দোলনের স্মৃতি

বীরেন ভট্টাচার্য, নয়াদিল্লি

নির্ভয়ার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ প্রতিবাদের স্মৃতি উস্কে দিল শুক্রবারের বিকেলে রাজধানী দিল্লির প্রতিবাদ। হাতরাসে নির্যাতিতা এবং খুনের প্রতিবাদে উত্তাল হল রাজধানী দিল্লি। নাগরিক মঞ্চের বিক্ষোভে যোগ দিয়ে দোষীদের শাস্তির দাবি জানাল বিভিন্ন সংগঠন।

উত্তরপ্রদেশ হিন্দু ধর্মের গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য, বৃহত্তমও বটে। কথিত, এখানেই নাকি জন্ম ও লীলা করেছিলেন শ্রীকৃষ্ণ, অর্থাৎ প্রেমের ক্ষেত্র। সেখান থেকে মাত্র ৪৬ কিলোমিটার দূরে হাতরাসে গণধর্ষণ, খুন এবং সর্বোপরি গোপনে মৃতদেহ পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে উত্তাল হল গোটা দেশ। নির্ভয়া কাণ্ডের আসামীদের ফাঁসি হয়েছে এখনও একবছর হয়নি, এবং ৮ বছর আগের সেই দগদগে ঘা যেন আবার মাথা চারিয়ে উঠল। আবারও এক “ভারত কী বেটি”র ন্যায় বিচারের দাবিতে গর্জে উঠল দেশবাসী।

শুরুটা হয়েছিল বৃহস্পতিবার বিকেলে। সেখানে রাহুল গান্ধি-সহ কংগ্রেস প্রতিনিধি দলকে আটকে দেওয়ার মধ্যে দিয়ে। এদিন সকালে নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার সময় মৃতার বাড়ি থেকে ১.৫ কিলোমিটার দূরে আটকে দেওয়া হয় ডেরেক ও’ব্রায়েনের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল প্রতিনিধি দলকে।

এদিন বিকেল ৫ টায় নয়াদিল্লির ইন্ডিয়া গেটে নাগরিক প্রতিবাদ-বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়। পরেই ইন্ডিয়া গেট চত্বরে জারি করা হয় ১৪৪ ধারা। ইন্ডিয়া গেট যাওয়ার সব রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে অনুমতি নিয়ে যন্তরমন্তরে তাঁদের বিক্ষোভ করতে বলা হয়। দুপুর গড়াতেই যন্তরমন্তর চত্বরে ছোট ছোট ভাগে ভাগ হয়ে বিক্ষোভ শুরু করে বিভিন্ন সংগঠন। যন্তরমন্তরেই মহাত্মা গান্ধি সেজে প্রতিবাদে সামিল হন যুব কংগ্রেসের সদস্যরা। বিকেল ৫টা বাজতেই জনপ্লাবন আছড়ে পড়ে রাজধানীর অন্যতম এই জায়গায়।

- Sponsored -

বিভিন্ন বাম সংগঠনের তরফে ব্যাপক প্রতিবাদ বিক্ষোভ শুরু হয়। সবার দাবি একটাই, শাস্তি দিতে হবে অপরাধীদের। এদিনের বিক্ষোভ যোগদান করেন সিপিআইএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি, বৃন্দা করাত, সিপিআই নেতা ডি রাজা। পরে ঘটনাস্থলে যান দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালও। এদিনের সমাবেশে হাজির হয়ে দোষীদের ফাঁসির দাবি করেন তিনি। ঘটনার তীব্র নিন্দা করে শাস্তির দাবি জানান সীতারাম ইয়েচুরি থেকে শুরু করে বৃন্দা করাত, ডি রাজার মতো বাম নেতারা।

যন্তরমন্তরে প্রতিবাদে যোগদান করে ভীমসেনা। সংগঠনের প্রধান হাতরাসের ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। পাশাপাশি তিনি সেখানে যাবেন বলেও ঘোষণা করেন। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ পদত্যাগ না করা পর্যন্ত এবং অপরাধীদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা করেন সংগঠনের প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদ।

অন্যদিকে দিল্লির বাল্মীকি মন্দিরেও একইভাবে নির্যাতিতার বিচারের দাবিতে প্রার্থনা হয়। সেখানে ছুটে যান কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধি।

এদিকে দিল্লির সঙ্গে বিক্ষোভ আছড়ে পড়েছে বাংলাতেও। এদিন বিকেলে আসানসোলের গান্ধি মূর্তির পাদদেশ থেকে রবীন্দ্র ভবন পর্যন্ত মশাল মিছিল করে পড়ুয়াদের একটি সংগঠন। তাতে যোগদান করেন সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ। রবীন্দ্র ভবনের সামনে বিক্ষোভ স্লোগানের মধ্যে দিয়ে নির্যাতিতার সুবিচারের দাবি জানানো হয়।

এদিকে এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই পাঁচ জন পুলিশ আধিকারিককে সাসপেন্ড করেছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। তাদের মধ্যে রয়েছেন হাতরাসের পুলিশ সুপার, ডেপুটি পুলিশ সুপার এবং থানার ওসি পর্যায়ের আধিকারিক।

কোনওরকম ব্যাপক ভিড় যাতে না বাড়ে তার জন্য জনপথ মেট্রো বন্ধ করে দেওয়া হয়। রাস্তায় নামানো হয়েছে ব্যাপক পুলিশ বাহিনী। একদিকে নিরাপত্তা এবং অন্যদিকে বিক্ষোভ, সব মিলিয়ে ক্ষোভের আগুনে ফুঁসছে রাজধানী দিল্লি।

Subscribe to our Whatsapp Group for daily news alerts.


You might also like

- sponsored -

Comments are closed.