সবংয়ের ঐতিহ্যবাহী ক্ষীরকুল গাছের সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার দাবি

নিজস্ব সংবাদদাতা : গাছ মানুষের সবচেয়ে কাছের বন্ধু। এরমধ্যে কিছু প্রাচীন ও পরিণত গাছ সব সময় প্রকৃতি ও মানুষের কাছে সবসময় বিশেষ আদরণীয় ও বিশ্বস্ত বন্ধু হয়ে থাকে। এই রকম একটি পুরোনো ঐতিহ্যবাহী প্রাকৃতিক বন্ধুর খোঁজ পাওয়া গেল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সবং ব্লকের চাঁদকুড়ি এলাকায়। গাছটির নাম ক্ষীরকুল। এই নামেই স্থানীয়দের কাছে পরিচিত। এই ঐতিহ্যবাহী গাছটি নিয়ে সমীক্ষা ও গবেষণা করতে বুধবার সবংয়ের চাঁদকুড়িতে উপস্থিত হয়েছিলেন ঝাড়গ্রাম জেলার কাপগাড়ি সেবাভারতী মহাবিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের প্রধান তথা পরিবেশ গবেষণা সংস্থা ট্রপিক্যাল ইনস্টিটিউট অফ আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ (টিয়ার) সম্পাদক ড. প্রণব সাহু।
সবংয়ের ভূমিপুত্র ড. সাহু অনুসন্ধান, সমীক্ষা ও গবেষণামূলক বিশ্লেষণের মাধ্যমে জানান যে, গাছটির বিজ্ঞানসম্মত নাম হল ‘মানিলকারা হ্যাক্সনডারা’ (Manilkara hexandra) এবং পরিচিত নাম ‘ক্ষীরনী’ (Khirni)। গাছটির আনুমানিক বয়স প্রায় ৩৫০ বছর, পরিধি ও উচ্চতা যথাক্রমে ১৫ ফুট ও ৫০ ফুট। প্রায় ২৫০০ বর্গফুট এলাকাজুড়ে অবস্থিত এবং চিরসবুজ।
অধ্যাপক ড. সাহু বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যার মাধ্যমে জানান যে, গাছটি বছরে প্রায় ২১ হাজার লিটার অক্সিজেন উৎপাদন করে এবং বায়ুমণ্ডল বিশুদ্ধ রাখে। অর্কিড, ফার্ন ও নানান পরাশ্রয়ী ও পরজীবী উদ্ভিদের উপস্থিতি গাছটির মধ্যে লক্ষ্য করা যায়। তাছাড়া কয়েক হাজার বিভিন্ন পোকামাকড়, সরীসৃপ, পক্ষী, জীবজন্তু ও ছত্রাক, পরাশ্রয়ী ও পরজীবী জীববৈচিত্র্য বসবাস করে। একটি আদর্শ বাস্তুতান্ত্রিক জীববৈচিত্র্য স্থান। যা প্রাকৃতিক জীব গবেষণাগার। স্কুল ছাত্র-ছাত্রীদের কাছেও সমীক্ষার স্থান। আরও জানা যায় গাছটিকে একটি পবিত্র গাছ হিসেবে স্থানীয় মানুষজন মেনে চলেন। তাই অধ্যাপক সাহু মনে করেন এই ধরনের কতিপয় প্রজাতির প্রাচীন গাছকে সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা করা আশু প্রয়োজন। এরাই প্রকৃতির মূল স্তম্ভ। এই গাছটি সংরক্ষণের বিষয়ে ড. সাহুর সাথে একমত স্থানীয় পরিবেশপ্রেমী শিক্ষক শান্তনু অধিকারী। স্থানীয় প্রায় সমস্ত মানুষ চান এই গাছটিকে সংরক্ষণ করা হোক।
Comments are closed.