স্বাস্থ্যের বহুমুখী সেবায় নজির গড়ল জলপাইগুড়ি পাথ সোসাইটি
রূপম চট্টোপাধ্যায়
করোনা আক্রন্ত সময়ে নানা ভাবে বহু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে কাজ করে চলেছে। অনেকেই এই পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রের ভূমিকায় সন্তুষ্ট থাকতে না পেরে বা সরকারের উপর আস্থা হারিয়ে বিপন্ন মানুষের দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু সাধ থাকলেও অনেককেই সামর্থ্যের অভাবে আর এই কাজ চালিয়ে যেতে পারছে না। কিন্ত জেদের দেয়ালে পিঠ রেখে এই চরম সংকটেও মানবসেবায় অবিচল থাকতে পেরেছে ‘জলপাইগুড়ি পাথ সোসাইটি’ বা জিপিএস মেডএইড (Jalpaiguri Path Society)। বহুদিন ধরেই এই সংস্থাটি মানুষের কাছে স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার কাজ করে চলেছে। আজ থেকে নয় বছর আগে সাগর দ্বীপ থেকে এদের পথচলা শুরু হয়েছিল। এরপর সুন্দরবনের সাতজেলিয়া, বনগাঁ, বসিরহাট, হরিপাল, বাঁকুড়া বর্ধমান হয়ে পুরুলিয়ার আদিবাসী অধ্যুষিত প্রত্যন্ত গ্রামে জিপিএস মেডএইড তাদের পরিষেবা পৌঁছে দিয়েছে। চিকিৎসার সরঞ্জাম ও খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছে দঃ ২৪ পরগনার কোদালিয়া ও পূর্ব মেদিনীপুরের বৃদ্ধাবাসে।
শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, জলপাইগুড়ি মেড এইড তাদের কাজের ব্যাপ্তি ঘটিয়েছে কেরল ও ওড়িশাতেও। এমনকী প্রতিবেশী দেশ নেপালেও জেপিএস মেডএইড বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। কখনও স্বাস্থ্য শিবির, কখনও জল পরিশোধন যন্ত্র, মশারি বিতরণ। আবার শিখিয়েছেন ব্লিচিং পাউডারের সঠিক ব্যবহার। গ্রামে খোলা হয়েছে সংস্থার উদ্যোগে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেদ্র। মেয়েদের জন্য জেপিএস মেডএইড চালু করেছে বয়নশিল্প কেন্দ্র। চক্ষু বিশেষজ্ঞ ড. দেবেশ দাসের তত্বাবধানে বর্ধমানের প্রত্যন্ত গ্রামে বিনামূল্যে ঔষধ, দাঁতমাজার সরঞ্জাম ও চশমা তৈরি করে দিয়েছে। গ্রামীণ স্কুলের মেয়েদের জন্য স্যানিটারি প্যাড ভেন্ডিং মেশিন এদের একটি বড় কাজ। হরিপালে ও কলকাতায় হুইল চেয়ার বিতরণ ও মেদিনীপুরে ৪০ জন অতি দরিদ্র মানুষের চোখ অপারেশন এদের সাম্প্রতিক কাজের অন্যতম অঙ্গ ছিল। এরই সঙ্গে তারা সমাজ সচেতনতা গড়ে তুলতে ও পরিবেশ রক্ষার্থে একগুচ্ছ কর্মসূচি নিয়েছে রাজ্যের নানা প্রান্তে। চলতি অতিমারীর সময়ে ও সাম্প্রতিক আমফানে জেপিএস মেডএইড তাদের সাহায্যের অভিযান অব্যাহত রেখেছে বিভিন্ন জায়গার সঙ্গে সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকায়। তাদের এই ধারাবাহিক কাজ এ রাজ্যে একটি বিরল নজির সৃষ্টি করেছে।
Comments are closed.