‘বিশ্বকবির আশ্রম রাজনীতির কাদামাখা কুস্তির আখড়া’, শান্তি ও মর্যাদা রক্ষার আবেদন বিশিষ্টজনদের
শোভাঞ্জন দাশগুপ্ত
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক ঘটনায় এবার সরব হলেন বাংলার সংস্কৃতিকর্মীরা। এক খোলা আবেদনে বিশিষ্টজনেরা জানিয়েছেন সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনায় তাঁদের হৃদয় ভারাক্রান্ত হয়ে উঠেছে। পাশাপাশি ঐকমত্য ও সহযোগিতার প্রস্তুতি ছাড়াই বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ পাঁচিল নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় যে অরাজকতার সৃষ্টি হয়েছে, তাতে বিশ্বকবির আশ্রম রাজনীতির কাদামাখা কুস্তির আখড়ায় পরিণত হয়ছে বলেও জানানো হয়েছে ওই খোলা আবেদনে। বিশিষ্টজনেরা জানিয়েছেন, এই দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতি আমাদের বিচলিত করে তুলেছে। আবেদনে এও জানানো হয়েছে যে, কোনও রাজনৈতিক দল অথবা কোনও প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের দিকে আমরা আমাদের অসন্তোষ-অভিযোগ ও অনুমানের অভিমুখ নির্দেশ করে অবস্থা ও অবস্থান আরও জটিল করে তুলতে চাই না… কিন্তু সুস্পষ্টভাবে এই অনভিপ্রেত ঘটনার সাথে যুক্ত কায়েমি কোনও পক্ষকেই সমর্থন করছি না, বরং সদর্থক ও সংবেদনশীল এক অবিচল পক্ষপাতহীনতা থেকে অবিলম্বে এই বেদনাদায়ক পরিবেশের অবসান চাইছি। শেষাংশে বিশিষ্টজনেরা, বাংলা ও বাঙালির আবেগজড়ানো বিশ্বভারতীর শান্তি ও মর্যাদা রক্ষা করতেও আবেদন জানিয়েছেন।
যে সকল বিশিষ্টজনেরা এদিনের খোলা আবেদনে মত দিয়েছেন তাঁরা হলেন– শঙ্খ ঘোষ, তরুণ মজুমদার, বিভাস চক্রবর্তী, মনোজ মিত্র, অরুণ মুখোপাধ্যায়, চন্দন সেন, পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, সব্যসাচী চক্রবর্তী, ওয়াসিম কাপুর, মেঘনাথ ভট্টাচার্য, কৌশিক সেন, কল্যাণ সেন বরাট, শুভেন্দু মাইতি, দেবজ্যোতি মিশ্র, রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত, বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, শমীক বন্দ্যোপাধ্যায়, অশোক মুখোপাধ্যায়, হরিমাধব মুখোপাধ্যায়, সোহাগ সেন, অনীক দত্ত, হিরণ মিত্র, দেবাশিস মজুমদার, দেবশঙ্কর হালদার, সীমা মুখোপাধ্যায়, মুরারি রায়চৌধুরী, তপনজ্যোতি দাস প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত ১৭ অগস্ট শান্তিনিকেতনের পূর্বপল্লি লাগোয়া পৌষ মেলার মাঠে পাঁচিল তোলাকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় বিশ্বভারতী। ব্যাপক ভাঙচুর চলে গোটা এলাকায়। ভেঙে দেওয়া হয় বিশ্বভারতীর একটি গেটও। উত্তেজনা পরিস্থিতিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্বভারতী বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তও নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ‘মেলার মাঠ বাঁচাও, শান্তিনিকেতন বাঁচাও’ নামে প্রতিবাদের ঝড়ও ওঠে সোশ্যাল মিডিয়ায়। উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর নামে এফআইআর দায়ের হয়। পাশাপাশি স্থানীয় ব্যবসায়ী সমিতির বিরুদ্ধেও পাল্টা এফআইআর করে বিশ্বভারতী।
Comments are closed.