কেন্দ্রের নয়া শিক্ষানীতিতে আমূল রদবদল, বিক্ষোভ বিরোধীদের
বীরেন ভট্টাচার্য, নয়াদিল্লি
করোনা এবং লকডাউনের আবহে দেশে একের এক নয়া ধামাকা আনছে কেন্দ্রীয় সরকার। সে কোনওদিন রাফাল হোক, কোনওদিন রামমন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের দিন ঘোষণা বা নয়া শিক্ষানীতি। বুধবার দেশে নয়া শিক্ষানীতি ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। ‘মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক’ নাম বদলে নিয়ে এবার থেকে সেটিকে ‘শিক্ষামন্ত্রক’ নাম দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও বদল করা হয়েছে শিক্ষাবর্ষ, পরীক্ষাপদ্ধতি-সহ একাধিক ক্ষেত্রে। আর তা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
২০২০-র নয়া শিক্ষানীতিতে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে জানানো হয়েছে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি, বিশেষ করে অষ্টম শ্রেণি বা তার বেশি পর্যন্ত সমস্ত স্কুলে মাতৃভাষা বা কোনও একটি আঞ্চলিক ভাষায় শিক্ষাদান করতে হবে। নয়া শিক্ষানীতিতে আরও বলা হয়েছে, সমস্ত ধাপেই সংস্কৃত পাঠ্য বিষয় হিসেবে নেওয়ার নিয়ম থাকবে এবং উচ্চমাধ্যমিক স্তরে বিদেশি ভাষা পড়া যাবে। মাধ্যমিকের পর দু’বছরের পাঠ্যক্রম তুলে দিয়ে ৫+৩+৩+৪, অর্থাৎ পঞ্চম শ্রেণির পর, তিন বছরের দুটি পাঠ্যক্রম এবং পরে চার বছরের একটি পাঠ্যক্রম থাকছে দ্বাদশ পর্যন্ত। প্রত্যেক বছরের পরীক্ষা তুলে দিয়ে, মাত্র তিনবার পরীক্ষায় বসতে হবে পড়ুয়াদের, তৃতীয় শ্রেণি, পঞ্চম এবং অষ্টম শ্রেণিতে হবে পরীক্ষা। যদিও দশম ও দ্বাদশে বোর্ডের পরীক্ষা থাকছে।
.@SitaramYechury: Bypassing Parliament, ignoring opinion of State govts & rubbishing opinions of all stakeholders, the Modi govt is unilaterally destroying our education system.#RejectNEP2020 https://t.co/P35LpcVJoQ
— CPI (M) (@cpimspeak) July 30, 2020
সরকারের তরফে বলা হয়েছে, এবার থেকে বিজ্ঞান ও কলা বিভাগে বা ভোকেশনাল ও অ্যাকাডেমিক পাঠ্যক্রমের মধ্যে কোনও স্পষ্ট বিভাজন বা পার্থক্য থাকবে না। ৩ হাজার বা তার বেশিসংখ্যক পড়ুয়া রয়েছে, এমন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিতে নজরদারি চালাতে উচ্চশিক্ষা সংসদ তৈরি করা হবে ২০৩৫ সালের মধ্যে। গড় এনরোলমেন্ট অনুপাত ২৬.৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করতেই এই নীতি বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
The Polit Bureau of the CPI(M) strongly denounces the Union Cabinet decision to unilaterally impose a New Education Policy and rename the Ministry of Human Resource Development.
+Thread #RejectNEP2020 pic.twitter.com/BEo3c16xVM— CPI(M) WEST BENGAL (@CPIM_WESTBENGAL) July 30, 2020
কেন্দ্রীয় সরকারের নয়া শিক্ষনীতির সমালোচনা করেছে জেএনইউ-এর বামপন্থী ছাত্র সংগঠন, বা তাদের ছাত্র সংসদ। সেখানে বলা হয়েছে, ‘করোনা অতিমারীর সময়কে বিভিন্ন জনবিরোধী নীতি লাগু করার সুবর্ণ সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করছে কেন্দ্র। নতুন শিক্ষানীতি চালু করা তারই উদাহরণ। এর বিরুদ্ধে দেশজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।’ নতুন শিক্ষানীতির এই খসড়া প্রস্তাব সংসদে কেন আলোচনা হল না এবং বিভিন্ন দল ও সাংসদদের মত ও সংশোধনীকে গুরুত্ব না দিয়ে সরাসরি চালু করা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সিপিআইএম। বিভিন্ন রাজ্য সরকার ও দলগুলিকে এড়িয়ে এই নীতি ঘোষণা করা সংবিধানসম্মত নয় বলে দাবি করেছে তারা।
Comments are closed.