পীড়িত পুরুষদের জন্য ‘মেন্স সেল’ হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলের

বেঙ্গল ফাস্ট : অল ইন্ডিয়া হিউম্যান রাইটস কাউন্সিল (All India Human Rights Council)-এর পক্ষ থেকে সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হল মেন্স সেল (Men’s Cell)। কার্যকারী সভাপতির পদে নিযুক্ত হলেন পদ্মিনী দত্ত শর্মা। পদ্মিনীর নতুন করে কোনও পরিচয়ের অপেক্ষা রাখে না; ইনি একজন বলিষ্ঠ লেখিকা, চিত্রপরিচালক এবং সমাজসেবী। তিনি বহু বই সমাজকে উপহার দিয়েছেন। যে বইয়ের মাধ্যমে ভেঙে যাওয়া মানুষের মন এবং ভেঙে পড়া মানুষদের নিজের বলিষ্ঠ মতামতের মাধ্যমে উঠে দাঁড়াতে সাহায্য করেছেন।
এই বিভাগের প্রেসিডেন্ট হলেন তুহিন ভট্টাচার্য। র্দীঘদিন যাবৎ নিপীড়িত পুরুষদের নিয়ে তুহিন কাজ করে এসেছেন দক্ষতার সাথে৷ তিনি বলেন, ‘একজন পুরুষের নামের পাশে খুব সহজেই যুক্ত করা হয়, “যে রক্ষক, সেই ভক্ষক”; কিন্তু একজন পুরুষের ক্ষেত্রে একটা কথা আমরা কখনই ভাবতে পারি না যে, “যে সহায়, সেও অসহায়” হতে পারে৷’ তিনি আরও বলেন ‘সমাজে প্রতিটা জীবের বাঁচার অধিকার সুরক্ষিত করতে হবে– এই একটাই ব্রত হওয়া উচিত সমগ্র মানবজাতির। তুহিনবাবু আরও বলেন, ‘নারীদের সুরক্ষায়, নারী সুরক্ষা আইন; পরিবেশের সুরক্ষায়, পরিবেশ সুরক্ষা আইন; এমনকী পশুদের জীবন সুরক্ষিত করতে পশু সুরক্ষা আইনও প্রবর্তিত। অথচ পুরুষের সুরক্ষার জন্য কিছুই নেই।’

পদ্মিনী দত্ত শর্মার কাছে প্রশ্ন রাখা হয় ‘আপনি একজন নারী হয়েও কেন পুরুষের অধিকারের পক্ষে?’ তখন তিনি স্বহাস্যে জানান, ‘একজন প্রকৃত নারী তো তখনই হয়ে ওটা সম্ভব যখন সেই নারীর মমত্ববোধ এবং চেতনাবোধ নিরপেক্ষ ভাবে সমাজে প্রতিফলন হয়৷ নিজ লিঙ্গের অন্যায়কে মেনে নিলে তো রামমোহন রায় বা বিদ্যাসাগরের মতো মনীষীদের আমরা মনে রাখতাম না৷ তাই লিঙ্গভেদে নয়, মানবিক তাগিদেই আমার এগিয়ে আসা এ কাজে।’
সহ-সভাপতির পদে নিযুক্ত হলেন বীরূপাক্ষ বিশ্বাস। পেশায় চিকিৎসক। আন্ডারগ্রাড করেছেন সিএমএসডিএইচ-এর থেকে; আর এখন পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন করছেন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ থেকে প্যাথলজি বিভাগে। স্পেশাল ইন্টারেস্ট রাখেন হেমাটলজি আর ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিভাগে। আপাতত উনি মানুষের জন্য কোভিড পরিষেবায় নিয়োজিত। মানুষের সেবাই ওনার প্রথম এবং শেষ ভালবাসা। আশা করা যায় এই সেক্টরেও নিজের পরিষেবা দিতে পারবেন বীরূপাক্ষবাবু। এছাড়াও প্রোগ্রেসিভ ডক্টরস অ্যাসসিয়েশনের জুনিয়র উইং-এর রাজ্য সহ-সভাপতিও উনি।
সমাজের কাছে চরম সুখের বিষয় হল, এই তিনজন সমাজ সচেতন দৃঢ়চেতা মানুষ একসাথে সমাজের স্বার্থে, বিশেষ করে নিপীড়িত পুরুষদের পাশে থাকার কাজে ব্রতী হয়েছেন। যেখানে পুরুষ তার সুখ-দুঃখ হাসি-কান্নার কথা বলতে পারবেন নির্ধিদ্বায়। পুরুষ পাবে তার রক্তক্ষরণের মর্যাদা, পেশী ও স্নায়ুতন্ত্র বিকাশের যথার্থতা, শিক্ষণীয় বাস্তবচেতনা, সুরক্ষিত মূল্যবোধ এবং সর্বোপরি মানবতা।
Comments are closed.